প্রায় তিন যুগ হলেও শেষ হয়নি ব্রীজ নির্মাণ কাজ। এ নিয়ে কারও কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। এতে প্রায় ২০টি গ্রামের জনসাধারণের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ব্রীজটি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের টাকুরিয়ায় জিয়া খালের উপর নির্মাণ কাজ শুরু নব্বই দশকের পর। কাজ শুরু দিকে ব্রীজের পিলার স্থাপন হলেও প্রায় তিন যুগ ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
কিন্তু এ নিয়ে কারও কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি বলে জানায় এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় প্রায় ২০টি গ্রামের বসবাসরত মানুষের চলাচল, ফসল আনা- নেওয়া, স্কুল কলেজ, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
এতে করে সরিষাবাড়ী উপজেলার টাকুরিয়া, মালিপাড়া,বামন জানি, মানিক পটল,বিন্নাফৈর কাজিপুর উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়নের শালগ্রাম, মাজনাবাড়ীসহ বিভিন্ন ২০ টি গ্রামের হাজারো মানুষ সরিষাবাড়ী শহরে বিভিন্ন প্রয়োজনে চলাচল করে। বর্তমানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে অথবা পানি পায়ে হেঁটে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধি পেলে এই জনপদের মানুষের প্রায় ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলতে হয়। এতে বাড়তি সময়ের পাশাপাশি খরচ ও পরিশ্রম হচ্ছে বেশি।
টাকুরিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুর গফুর বলেন, নির্মাণ কাজ শুরুর সময় আমাদের আশার আলো হলেও এখন তা কাটা হয়ে দাড়িয়ে আছে। স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো।
অপর এক বৃদ্ধ কৃষক বলেন, যহন ব্রীজের কাম শুরু হয় তহন ছিলাম যুবক আর এহন এক ঠ্যাং কব্বরে গেছে গা, মরার আগে সেতু দেখবার পামু কি?
স্থানীয় এক শিক্ষার্থী বলেন, বন্যার সময় এই খালে পানি থাকার কারণে ছোট ছোট শিক্ষার্থীসহ অন্যদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। শুধু মৌখিক আশ্বাস নয় সত্যিকারের বাস্তবায়ন চায় এলাকাবাসী। সেতু নির্মাণের জন্য অতি দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শামসুল হক জানান, আমাদের এই চরাঞ্চলের মানুষের আয়ের উৎসই হচ্ছে কৃষি কাজ। আমাদের রবি শস্য সহ অন্যান্য ফসল ভালো ফলন হলেও রাস্তাটি সেতু না থাকায় বাজারে নিয়ে ভালো দামে বিক্রি করতে পারে না কৃষক। অসুস্থ্য কোন রোগীকে হাসপাতালে নেয়া যায়না।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা জানান, এলাকাবাসী ও আমার রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা বিষয়টি অবগত করে। পরে আমি বিভিন্ন কার্যালয়ে এ সেতুর কাজের কাগজপত্র খোজঁ নিতে গেলে তা খুঁজে পাইনি। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অবগত করব।
পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আশরাফুল আলম মানিক জানান, আপাতত জনগণের চলাচলের জন্য পরিষদের পক্ষ থেকে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দিব। এর পাশাপাশি উপজেলা এলজিইডি`র কর্মকর্তার সাথে কথা বলে কিভাবে এখানে পূর্ণাঙ্গ সেতু নির্মাণ করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করব।
সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলার প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন , সেতুটি সরেজমিনে পরিদর্শণ করেছি, সেতুটি হাফ ডাউন অবস্থায় আছে, পেয়ার ক্যাপ পর্যন্ত কাজ হলেও বাকি কাজ শেষ হয়নি। উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সেতুটি নির্মাণ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।