নওগাঁর আইন ভেঙে ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমি কেটে পুকুর খননের হিড়িক পড়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে একের পর এক পুকুর খনন করা হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায়। মাটি ব্যবসায়ী জিল্লুর ও মাইনুল ক্ষমতা ও পেশির জোরে আইনকে তোয়াক্কা না করে দেদারছে পুকুর খননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুকুর খননের মাটি তারা সরাসরি ইটের ভাটায় ও এলাকায় সরবরাহ করছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিয়ামতপুর উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নে ভেকু মেশিন দিয়ে ধান চাষের জমির মাটি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে। কেউ কেউ পুরনো ছোট পুকুর পারের চারদিকের ভিটামাটি ও গাছপালা কেটে পুকুর বড় করছেন। বিষয়টি এখন সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এসব পুকুর খনন বেআইনি জেনেও সব পক্ষকে মানিয়ে নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে পুকুরগুলো খনন করা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ রাতের আঁধারে ভেকু মেশিন চালিয়ে খনন কাজ করছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিনা বাধায় পুকুর খনন কাজ সম্পন্ন হয়। গতবছর অনেক কয়েকটি পুকুর খনন করা হয়। এদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বাহাদুর ইউনিয়নের রামগাঁ গ্রামে দক্ষিন পাড়া গিয়ে দেখা যায়, পুকুর ও পাড়ের মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে অত্যন্ত গভীর করে কেটে অসংখ্য ট্রাক্টরযোগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
গ্রামবাসী অভিযোগ করেন, ট্রাক্টর দিয়ে মাটি পরিবহন করায় গ্রামের যাতায়াত পথ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জমির মালিক মৃত ইয়ার মন্ডলের ছেলে শামসুদ্দিন কোন কথা না বলে এড়িয়ে যান। বিষয়টি সবার জানা থাকলেও স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার বা প্রশাসনের কেউ এ পুকুর খননে তাদেরকে নিষেধ করেননি।
এই গ্রামের সড়কের পাশে প্রকাশ্যে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে আর একটি বিশাল পুকুর বানানো হচ্ছে। এটির মালিক এই গ্রামের বাদল। তিনি জানালেন, তার পুকুরে মাছ চাষ ভালো হয় না। মাছ চাষ করার জন্য পুকুরের পার কেটে গভীর করা হচ্ছে। কিন্তু এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোন অনুমতি নেননি।
এ ব্যাপারে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ান বলেন, এ ধরনের কোন অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ১৮৮২ সালের ইজমেন্ট রাইট এ্যাক্ট আইনের ৪ নাম্বার ধারায় কৃষি জমি আইনের সুরক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে। কোনভাবেই তার ব্যবহার ভিত্তিক শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। কৃষি জমি এক ফসলি বা একাধিক ফসলি যাই হোক না কেন তা কৃষি জমি হিসাবেই ব্যবহার করতে হবে। উক্ত আইনে স্পষ্টভাবে ফসলি জমি বা পুকুর পার খননের শাস্তির বিধান থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে একেবারেই নীরব।
কেএস