ধনু নদে অবৈধ মাছের ঘের, উচ্ছেদে নেই উদ্যোগ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩, ০৪:৫০ পিএম

নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর ধনু নদে প্রভাবশালীরা গড়েছে অবৈধ মাছের ঘের। এসব ঘের উচ্ছেদে প্রশাসনের নেই কোন উদ্যোগ। উপজেলা প্রশাসন বলছে, এটি দেখার দায়িত্ব নৌ-পুলিশের, আর নৌ-পুলিশ বলছে এর দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের। অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদের দায়িত্ব নিতে চায় না কেউই।

নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর ধনু নদে স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে মাছের ঘের তৈরি করে ধনু নদের বেশ কয়েক কিলোমিটার জায়গা দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। যে কারণে যেকোন সময় ঘটতে পারে নৌ দুর্ঘটনা। বহতা নদটিতে কয়েক‍‍`শ মাছের ঘের দেখে মনে হয় প্রশাসনের কাছ থেকে লিজ নেওয়া হয়েছে। সরকারিভাবে ধনু নদটি উন্মুক্ত থাকার কথা থাকলেও এই দৃশ্য নেই এখানে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ধনু নদে অসংখ্য মাছের ঘের তৈরি করে নিজেদের দখলে নিয়েছে প্রভাবশালী মহল। খালিয়াজুরীর উত্তরে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ সীমানা। থেকে দক্ষিণে কিশোরগঞ্জের ইটনা এলাকা পর্যন্ত প্রায় কয়েক শত মাছের ঘের তৈরি করে পুরো নদীকেই দখলে করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। নিজেদের খেয়াল খুশী মত প্রশাসনের চোখের সামনেই অসংখ্য মাছের ঘের তৈরি করে মাছ ধরছে তারা। অদৃশ্য কারণে খালিয়াজুরী উপজেলা প্রশাসন ও লেপসিয়া নৌ- পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ রয়েছে নীরব।  

এই নদ দিয়ে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে পাথর আর সিলিকা বালি বোঝাই করে বড় বড় বাল্কহেড, কার্গো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকে। নদপাড় থেকে শুরু করে মাঝ নদী পর্যন্ত দেখা যায় অসংখ্য মাছের ঘের। এসব মাছের ঘের তৈরির ফলে নৌ-চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

এলাকাবাসী জানায়, ঘের তৈরির ফলে এ নদে স্থানীয় গরীব জেলেদের  মাছ ধরতে পোহাতে হয় অনেক ঝামেলা। নানা বিপত্তির মুখে পড়তে হয় তাদের। এছাড়া এতে নদের পানি প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। এরফলে পলি মাটি জমে নদটি হারাচ্ছে নাব্যতা। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।

স্থানীয় জেলে রুমন মিয়া ও আব্বাছ মিয়া জানান, এইসব ঘেরের জন্য নৌকা চলাচলে সমস্যা হয়। ঘের মালিকদের জন্য ওই এলাকার আশে পাশে কেউ মাছ ধরতে পারে না।

এ বিষয়ে খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়টা দেখার দায়িত্ব নৌ-পুলিশের। আমি আইন শৃংখলা সভায় এ বিষয়ে কথা বলেছিলাম। এ কাজটা হল পুলিশ ও নৌ-পুলিশ তদারকি করে আইনগত ব্যবস্থা নিবে। যারা এসব কাজে জড়িত আছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া আছে।

তিনি আরও বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সময় অবৈধ ঘেরের মালিকদের খোঁজে পাওয়া যায় না।

খালিয়াজুরীর লেপসিয়া নৌ-পুলিশের ইনচার্জ আব্দুল সালাম বলেন, অবৈধ মাছের ঘের উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কেএস