দক্ষিণাঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীত

বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩, ০৫:৩১ পিএম
  • হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া সহ ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে
  • নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত প্রায় ৪ হাজার রোগী ভর্তি
  • অসহায় মানুষের পাশে এখনও পর্যন্ত শীতবস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসেনি কেউ

হাড় কাপানো শীত অনুভূত হচ্ছে বরিশাল শহর সহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলে। উত্তর-পশ্চিমের লাগাতার হিমেল হাওয়ার সাথে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত। 

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে স্বাভাবিক ১১.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসের স্থলে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ১০.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যায়। এর আগের শুক্রবার বরিশালে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ১৯.৮ ডিগ্রী। সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। যাদের বেশীরভাগই শিশু ও বয়োবৃদ্ধ। দক্ষিনাঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৪ হাজার রোগী ভর্তি হয়েছে ইতোমধ্যে। মৃত্যু হয়েছে একজনের। বিগত দুই মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে আগত রোগীর সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। পূর্ববর্তী ৪৮ ঘন্টার চেয়ে গতকাল সকালে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস হ্রাস পেয়েছে।

সপ্তাহ খানেক ধরেই তাপমাত্রার পারদ নিচে নামার সাথে উত্তর-পশ্চিমের হিমেল হাওয়া নিয়ে শীতের কামড়ে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের জীবন অনেকটাই দুর্বিসহ। সাথে মাঝারী থেকে তীব্র কুয়াশা এবং আকাশে মেঘের আনাগোনা সূর্যকে আড়াল করায় জনজীবন আরো বিপন্ন। মেঘনা অবহিকা সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথ ও দিগন্ত বিস্তৃত ফসলি জমি প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে অনেক বেলা অবধি মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে। ফলে শীতকালীন সবজীসহ মাঠে থাকা উঠতি আমন ধানের ক্ষতি বাড়ছে। কিছু এলাকায় বোরো বীজতলাও ইতোমধ্যে ‘কোল্ড ইনজুরির কবলে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে আংশিক মেঘলা অকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকার কথা জানিয়ে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তবে কোন কোন স্থানে কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকার কথাও বলা হয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থানের কথা জানিয়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় মাঝারী থেকে তীব্র শীতের অনুভূতির কথা বলছে আবহাওয়া অফিস। তবে রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকলেও দিনের বেলা তা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।

শনিবার সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘন্টায় বর্তমান পরিস্থিতির সামান্য পরিবর্তনের কথা বলছে আবহাওয়া দপ্তর। এদিকে কনকনে শীতে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছে বরিশালের জনজীবন। বিশেষ করে ছিন্নমূলসহ নিন্ম আয়ের মানুষ পড়েছে বেকায়দায়। আগামী কয়েকদিনে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেন আবহাওয়া অফিস। অপরদিকে তীব্র শীত জেঁকে বসায় বরিশালের জনজীবন অনেকটা বিপর্যন্ত হয়ে গেছে। দিনের বেলা বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ রাস্তায় বের হলেও সন্ধ্যার পর মানুষজনের চলাচল কম। অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। স্বচ্ছল মানুষ শীত কাপড় দিয়ে শীত নিবারনের চেস্টা করলেও বিপাকে পড়েছেন ভাসমান, ছিন্নমূল সহ নিন্মআয়ের মানুষ। দিনের বেলা যেমন তেমন হলেও খরকুটা জ্বালিয়ে রাত পাড় করার চেষ্টা করছেন তারা। শীতে বিপর্যস্ত নিন্ম আয়ের মানুষের পাশে এখনও পর্যন্ত শীতবস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসেনি কেউ।

কেএস