পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড পরিমাণ টাকা

আশরাফুল ইসলাম তুষার, কিশোরগঞ্জ প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৩, ০৮:৪২ পিএম

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্সে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া গেছে।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) দিনব্যাপী গণনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দানের টাকার এই হিসাব পাওয়া যায়।

বিপুল পরিমাণ এ নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে। বৈদেশিক মুদ্রাও এবার বেশি পাওয়া গেছে। এছাড়া দান সিন্দুকে প্রথমবারের মতো পাওয়া গেছে হীরের গয়না।

এর আগে গত বছরের ১ অক্টোবর সর্বশেষ পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খোলা হয়েছিলো। তখন দান সিন্দুক থেকে সর্বোচ্চ তিন কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

এবার তিন মাস ৬ দিন পর দান সিন্দুক খোলা হয়। দান সিন্দুকগুলো থেকে রেকর্ড ২০ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে পাগলা মসজিদের ৮টি দান সিন্দুক খোলা হয়। দান সিন্দুক থেকে টাকা খুলে প্রথমে বস্তায় ভরা হয়।

এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনা। টাকা গণনায় মসজিদ মাদরাসার ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মসজিদ মাদরাসার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশ নেন।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার সুলতানা রাজিয়া, অহনা জিন্নাত, শেখ জাবের আহমেদ, মোছা. নাবিলা ফেরদৌস, মো. মাহমুদুল হাসান ও রওশন কবির, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা, রূপালী ব্যংকের এজিএম মো. রফিকুল ইসলাম, পাগলা মসজিদ কমিটির সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা প্রমুখ টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন।

এছাড়া ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান টাকা গণনার কাজ পরিদর্শন করেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল।

সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সাথে সাথে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও। মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রসারিত হয়েছে মূল মসজিদ ভবন।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

কেএস