গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির সরকারি শ্রমিকরা মাটি কাটছে ওই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আজিজের বাড়িতে। নিয়ম অনুযায়ী এসব প্রকল্পের শ্রমিকদের গ্রামীণ মাটির রাস্তা সংস্কারে কাজ করানো হয়। কিন্তু নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করে এসব শ্রমিক দিয়েই জোর করে ইউপি সদস্য তার নিজের বাড়িতে খাল ভরাটের কাজ করাচ্ছেন।
সরেজমিনে গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, চল্লিশ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পের নারী-পুরুষ মিলে সাতাশ জন শ্রমিক তার বাড়িতে মাটি কাটার কাজ করছেন। বাড়ির সামনে থেকে মাটি নিয়ে বাড়ির ভিতরে, ঘরের পিছনের খাল ভরাট করছেন তারা।
শ্রমিকরা জানায়, তারা এর আগে রাস্তায় মাটি কাটছিলেন। কিন্তু ইউপি সদস্য আজিজের নির্দেশে শনিবার সকাল থেকে প্রকল্পের ২৭ জন শ্রমিক মেম্বারের বাড়িতে মাটি কাটা শুরু করেন। এসময় কেউ কেউ মেম্বারের বাড়িতে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে মেম্বর আজিজ তাদেরকে ধমক দেয় বলেও অভিযোগ করেন শ্রমিকরা। পরে তারা বাধ্য হয়েই মেম্বারের বাড়ির খাল ভরাটে মাটি কাটেন।
প্রকল্পের রবিউল, রাজিনা, নবিরনসহ আরো একাধিক মাটি কাটা শ্রমিক বলেন, আমরা আজ সকাল থেকে মেম্বারের বাড়িতে খাল ভরাট করছি। এরআগে রাস্তায় মাটি কাটছি। আমরা শ্রমিক, আমাদেরকে যেখানে কাজ করার হুকুম দেয়, সেখানেই করি। মেম্বার সকালে তার বাড়িতে কাজে ধরিয়েছে, সকাল থেকে এখানে মাটি কাটছি। এসময় কেউ কেউ বলেন, আমরা কয়েকজন মেম্বারের বাড়িতে মাটি কাটতে চাইনি, মেম্বর আমাদের সাথে রাগারাগি করছে।
এ বিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আজিজ বলেন, আমি এর আগে আমার বাড়ি থেকে মাটি নিয়ে রাস্তায় দিয়েছি। এবার সেই খালটি পূরণ করছি। এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি পিআইও অফিস জানে আর আমি কারো সাথে রাগারাগি করিনি।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আনিছুর রহমান বলেন, আমার এ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার অফিসের কাজে আজ মোল্লারচরে গেছেন। এজন্য ওই প্রকল্পে আজ খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকরা মেম্বরের বাড়িতে মাটি কাটার কাজ করতে পারবে না। এসময় এমন বিষয়টি তার জানা নেই বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল আলম আমার সংবাদকে বলেন, এসব প্রকল্পের শ্রমিকদের মেম্বররা তাদের ব্যক্তিগত কাজে লাগানোর সুযোগ নেই। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। সত্যতা মিললে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেএস