‘আবাদ না করলে খামো কি? হামরা বসি থাকলে তো বাড়ির সবাকে না খেয়া থাকা লাগবে।’ কথাগুলো বলছিলেন রংপুরের গঙ্গাচড়ার কৃষক শফিকুল ইসলাম।
মাঘ মাসের কনকনে শীত উপেক্ষা করে বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) রংপুর জেলায় সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে রংপুর আবহাওয়া অফিস। শীতের তীব্রতা বাড়লেও থেমে নেই কৃষক।
গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমি।
উপজেলার বোরো চাষিদের উন্নত জাতের বোরো ধান আবাদসহ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং চাষিদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিনামূল্যে হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের বীজ এবং রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলার কোলকোন্দ, বড়বিল, আলমবিদিতর, লক্ষ্মীটারী, গজঘণ্টা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, শীতের সকালে কেউ গরু দিয়ে আবার কেউ ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করছেন। কেউ জমি প্রস্তুত করছেন, কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন আবার কেউ জমিতে চারা রোপণ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
শ্রমিকরাও চুক্তি ভিত্তিতে কাজ করছেন। হাইব্রিড এবং উচ্চ ফলনশীল উফসী ধান আবাদে উৎসাহ প্রকাশ করছেন কৃষকরা।
গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের চেংমারী গ্রামের বোরো চাষি লাইবুল ইসলাম জানান, শীতের তীব্রতা বাড়লেও তারা বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কারণ একটু আগাম থাকতে বোরো ধানের চারা রোপণ করলে ধানের ফলন ভালো হয়। তেমনি ক্ষেতে রোগবালাই এর সম্ভাবনা কম থাকে। তবে তেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবছর ধান উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে।
কোলকোন্দ ইউনিয়নের স্কুলের পাড় এলাকার কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, বাবারে রাইতোত ঘরত টুপুস টুপুস করি শীতের পানি পরে। শীত হইলেও আবাদ করা লাগবে। আবাদ তো আর থামে থোয়া যাবার নয়। আবাদ না করলে খামো কি? হামরা বসি থাকলে তো বাড়ীর সবাকে না খেয়া থাকা লাগবে। ধানের দাম ভালো পাছুং এবার। তাই ৪ দন (২৭ শতকে এক দন) জমিত ধান লাগাইম। ২ দন জমিত লাগা শেষ হইছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা বলেন, চলতি বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। মাঠে মাঠে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে আমনের মতোই উপজেলায় বোরো ধানেরও বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এআরএস