সাংসারিক জীবন যাপন নিয়ে কষ্টে ভুগছে পটুুয়াখালী রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইদিয়া ইউনিয়ানের কাটাখালী গ্রামের মৃত মুছা মাস্টার এর ছেলে মো. জাকারিয়া। পরিবারের সদস্য সংখ্যা তিন মেয়েসহ ৫ জন। তার বড় মেয়ে জীম আক্তার বড়বাইদিয়া এ হাকিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এস এস সি পরিক্ষার্থী। মেজ মেয়ে জিনাত সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। ছোট মেয়ে তাসনুবা প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী।
জাকারিয়া পেশায় একজন জেলে ছিলেন। তিনি খালঘোড়া গদি ব্যাবসায়ী শহিদ হাওলাদার এর মাছধরা ট্রলারের মাঝি। ২০১৭ সালে সাগরে মাছ ধরার জন্য খালঘোড়া শুভ ফিস গদির ঘাট থেকে ট্রলারে ওঠার সময় তার পায়ে আঘাত পায় এবং সেখানেই জ্ঞান হারায়। জ্ঞান আসার পর তার এক পা ও এক হাত অচল হয়ে যায়। তাকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে ডাক্তার বলেন তার মেরুদন্ডের সার্ভিকল কর্টের সমস্যা হয়ে গেছে, অপারেশন করলে ঠিক হবে। কিন্তু তিনি টাকার অভাবে অপারেশন করতে পারেননি। তার সংসার আজ পথে এসে দড়িয়েছে। এভাবে কেটে গেছে ৭টি বছর। এখন আর তার চিকিৎসা চালানোর ক্ষমতা নেই। তার ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষা আসলে বৃষ্টির পানি বাহিরের আগে ঘরে পড়া শুরু করবে।
বড়বাইদিয়া ইউনিয়ানের চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি নতুন চেয়ারম্যান হয়েছি এখন পর্যন্ত কোন কাজ আমার হাতে আসে নাই, তাই আমি কোন সুবিধা দিতে পারি নাই। তার সমস্যা দেখে আমি তার স্ত্রীকে এ হাকিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী হিসাবে চাকুরী দিয়েছি। কিছুটা হলেও তার উপকারে আসতে পেরেছি। সে আমাকে বলেছে যে তার ঘর কিছু ছেলেরা বারবার চুরি করে এবং তাদের উপর অত্যাচার করে। আমি ওই ওয়ার্ডের মেম্বারকে বলে দিছি বিষয়টা ভালোভাবে দেখার জন্য।
প্রতিবন্ধী জাকারিয়ার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা বলেন, আমরা আগে ভালোই চলতাম। আমার স্বামীর এক্সিডেন্ট এর পর চলতে পারতেছি না। আমি আমার চাকরি থেকে মাসে ৮২০০ টাকা বেতন পাই। তাতে আমার সংসার চলে না। আমার তিন মেয়ে লেখাপড়া করাইতে অনেক খরচ লাগে। তাদের বইও ঠিকমতো কিনতে পারি না। এখন সংসার নিয়ে বিপদে আছি। মাঝে মাঝে না খেয়েও থাকতে হয়। আর আমার স্বামীর চিকিৎসা তো এখন আর চালাতে পারছিই না। আল্লাহ ছাড়া আমাদের দেখার আর কেউ নেই।
প্রতিবন্ধী জাকারিয়া বলেন, আমার প্রথম দাবি হলো সরকারের সহযোগিতায় যেনো চিকিৎসা চলাতে পারি এবং রাঙ্গাবালী উপজেলা চেয়ারম্যান ও রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার এর সহযোগিতায় আমাকে যদি চিকিৎসা করা হতো তাহলে আমি সুস্থ হয়ে উঠতাম। আমি আমার পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। আমি শুধু পঙ্গু ভাতা পাই ১ বছর হলো। আমাকে সহযোগিতা করার মতো কি কোন লোক নেই এই দুনিয়াতে। শারীরিক কাঠামো ঠিক রাখার জন্য ঔষধ ক্ষেতে পারি না। আর ঔষধ খেলে আমার মেয়েদের কে খাবার দিতে পারি না। এমন ও দিন যায় আমি না খেয়ে জীবন যাপন করি। কেউ আমার দিকে ফিরেও তাকায় না।। এই দুনিয়াতে গরীব কে সহযোগিতা করার জন্য কোন লোক নেই।
তিনি বলেন আমি সমাজের সকলের কাছে সাহায্যের আবেদন করছি। আমার ঘরের অবস্থা খুব খারাপ। মেয়ে বড় হয়েছে এভাবে ভাঙা ঘরে সাবালিকা মেয়ে নিয়ে থাকা যায় নায়। ঘর ভাঙ্গা থাকার কারণে প্রচন্ড শীতে ঘুমাতে পারছি না।
আরএস