নৌকা-ট্রলারের ধাক্কায় নিখোঁজ ২

বরিশালে ট্রলার-বাল্কহেডের সংঘর্ষে ১ জন নিহত

বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩, ০৫:০৯ পিএম

বরিশাল জেলার কালাবদর নদীতে এমভি প্রিন্স অব রাসেল-৫ লঞ্চের ধাক্কায় মাছ ধরার কয়েকটি নৌকা ডুবে দুই জেলে নিখোঁজ হয়েছেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলে ও স্থানীয়রা লঞ্চে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, কর্মচারীদের মারধর, মালামাল ও টাকা লুট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অপরদিকে বাল্কহেডের ধাক্কায় খেয়া পারাপারের একটি ট্রলার ডুবে নান্নু বেপারী (৬০) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। এ ঘটনায় নৌ-পুলিশ বাল্কহেডসহ পাঁচ কর্মচারীকে আটক করেছেন।

নিখোঁজ জেলেরা হলেন-হিজলা উপজেলার বরজালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা বাকীউল্লাহ সিকদার (৪০) এবং একই ইউনিয়নের লহ্মীপুর গ্রামের বাকের মৃধা (৩৫)।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ভোর রাত থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত মেহেন্দিগঞ্জের চর শেফালী লঞ্চঘাট এলাকায় এসব ঘটনা ঘটেছে।

উলানিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা এমভি প্রিন্স অব রাসেল-৫ লঞ্চ ঘণ কুয়াশার কারণে চর শেফালী ঘাটে নোঙর করতে গিয়ে মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত কয়েকটি নৌকায় ধাক্কা দেয়। এতে পাঁচটি নৌকা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ডুবে যায়। এসব নৌকায় থাকা জেলেরা লাফিয়ে নদীতে পরে রক্ষা পেলেও দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা চেষ্টা করছেন।

তিনি আরও জানান, ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা লঞ্চের কর্মচারীদের মারধর, ভাঙচুর ও লুট করেছে বলে লঞ্চের স্টাফরা অভিযোগ করেছেন।  

লঞ্চের সুপারভাইজার সাইদুর রহমান জানান, ঘন কুয়াশার কারণে কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না। তখন চর শেফালী ঘাটে লঞ্চ ভেড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সময় লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবি হয়। লোকজন লঞ্চে ভাঙচুর ও লুট করেছে। তাকে নামিয়ে একটি ক্ষেতের মধ্যে নিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। পরে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা করা হয়। ওই টাকা না দিলে হামলাকারীরা তাকে জবাই করার হুমকি দেয়। পরে লঞ্চের যাত্রীরা ৯৯৯ এ কল করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। বর্তমানে তিনি বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

অপরদিকে গৌরনদী উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদীর হোসনাবাদ খেয়াঘাট এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রলার ও বালু বোঝাই বাল্কহেডের মুখোমুখী সংঘর্ষে নান্নু বেপারী (৬০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।

সোমবার বেলা এগারোটার দিকে নিহতের লাশ নদী থেকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। নিহত নান্নু সাহেবেরচর গ্রামের বাসিন্দা।

গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. বিপুল হোসেন জানিয়েছেন, রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাত আটটার দিকে খেয়াঘাট থেকে কয়েকজন যাত্রী এবং মোটরসাইকেল নিয়ে মুলাদীর নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবেরচর খেয়াঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় একটি যাত্রীবাহী ট্রলার। মাঝ নদীতে বালু বোঝাই বাল্কহেডের সাথে ট্রলারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে একটি মোটরসাইকেলসহ আটজন যাত্রী নদীতে পড়ে যায়। এরমধ্যে নান্নু নামের এক ট্রলার যাত্রী নিখোঁজ হয়। সোমবার বেলা এগারোটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সদস্যরা হোসনাবাদ লঞ্চঘাট এলাকার নদী থেকে নিখোঁজ ব্যক্তি নান্নু বেপারীর মরদেহ উদ্ধার করেন।

মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর নৌ-পুলিশের ইনচার্জ প্রদীপ কুমার মিত্র বলেন, এ ঘটনায় বাল্কহেডসহ পাঁচ কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে।

আরএস