আসামিদের আটকাতে গিয়ে আটকে গেলেন বাদী নিজেই

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৩, ০৯:২৪ পিএম

জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে থানায় দায়ের করা একটি মারামারি মামলার আসামিদের আদালতে আটকাতে গিয়ে (জামিন নামঞ্জুর করাতে গিয়ে) আটকে গেলেন মামলার বাদী নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল গ্রামের মোঃ সায়েম (২৭) নামে এক যুবক। তিনি বলাইশিমুল গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মামলাটির আসামিপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুর রশিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রোববার (২৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দুয়া থানার ১৮ নম্বর মামলার আসামিরা আত্মসর্মপণ করতে নেত্রকোনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (২)-এ হাজির হন। মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো উল্লেখ করে আসামিদের পক্ষে আমি চ্যালেজ ছুড়ে দিলে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে বাদী সায়েমকে তলব করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বাদী আদালতকে অসংগতিপূর্ণ তথ্য প্রদান করায় তাকে কাস্টরী (আটক) করা হয়। পরে অবশ্য রাত ৭টার দিকে তাকে সর্তক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এডভোকেট আব্দুর রশিদ আরও বলেন, মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন যে, ১নং সাক্ষি হলুদ মিয়াকে ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেছেন ১নং আসামি এসএম কবির। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঘটনার সময় এসএম কবির এলাকাতেই ছিলেন না। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে আদালত জখমী হলুদ মিয়ার জখম প্রত্যক্ষ করেন এবং তার শরীরের কোথাও জখমের কোনো আলামত ছিল না। সুতরাং মামলাটি যে মিথ্যা তা স্পষ্ট।

তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট একেএম নূরুদ্দিন নয়নের মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে বলাইশিমুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ ঘটনায় দুপক্ষই মামলা দায়ের করেছে। রোববার আদালতে উল্টা পাল্টা কথা বলায় বাদী সায়েমকে আটক করা হয়েছিল। পরে ওইদিন রাতেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।  

এ নিয়ে কথা হলে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন বলেন, মামলা দুটির তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল করা হবে।    

এদিকে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বলাইশিমুল গ্রামের আজাদ মিয়ার সাথে একই গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য নয়ন মিয়ার বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে গত ২২ জানুয়ারি সকালে বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে আজাদ মিয়া তার লোকজন নিয়ে কাজ করার সময় প্রতিপক্ষের নয়ন মিয়াসহ তার লোকজন এতে বাধা দেয়। পরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নয়ন মিয়া ও তার লোকজন দেশীয় অস্ত্রাদি নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা করলে তিন নারীসহ অন্তত ৬ জন আহত হয়। 

এ ঘটনায় আজাদ মিয়া বাদী হয়ে নয়ন মিয়াসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গত ২৫ জানুয়ারি কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ১৮। একই ঘটনায় হলুদ মিয়াকে গুরুতর জখমী দেখিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি মোঃ সায়েম বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের এসএম কবিরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

কেএস