সিলেট নগরীতে মাত্র সোয়া এক কিলোমিটার দূরে পাল্টা সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি। সমাবেশে উভয় দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন। একইদিনে বড় দুইদলের পাল্টপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে নগরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে দুটো দলই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করতে চায় বলে শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
সবশেষ সিলেটে সবশেষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন খালেদা জিয়ার সাজার রায়কে কেন্দ্র করে সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এরপর উভয় দল নানা ইস্যুতে রাজপথে কর্মসূচি পালন করে গেলেও কখনো মুখোমুখি হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দশ দফা দাবিতে সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয়েছে। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় নগরের রেজিস্টারি মাঠে এ সমাবেশ শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সিলেটে পৌঁছেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসীনা রুশদীর লুনা, ড. মো. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উিন নবী সুহেল, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এদিকে বিএনপির সমাবেশস্থলের মাত্র সোয়া এক কিলোমিটার দূরে পাল্টা 'শান্তি সমাবেশ' করছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ ছাড়া প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হকও সমাবেশে যোগ দেবেন। এছাড়াও জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এতে বক্তব্য দেবেন।
সমাবেশেকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশেস্থলে জড়ো হচ্ছেন উভয় দলে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
দুই দলের পাল্টা কর্মসূচি প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এটাকে থ্রেট (হুমকি) মনে করি না। কারণ, সিলেট নগর শান্তির নগর। এখানে প্রত্যেকে প্রত্যেকের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবেই পালন করে থাকে। আমরা নেতা-কর্মীদের নিয়ে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে অহিংস কর্মসূচি পালন করব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শান্তি সমাবেশ করছি। সিলেটে যেন সৌহার্দ্যের রাজনীতি বজায় থাকে, সে জন্য আমরা রেজিস্টারি মাঠের ভেন্যু পরিবর্তন করে শহীদ মিনারে সমাবেশ আয়োজন করেছি। আওয়ামী লীগ এখানে উদারতা দেখিয়েছে, আওয়ামী লীগ সংঘাতের রাজনীতিকে পছন্দ করে না।’
আওয়ামী লীগ-বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে টহল পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
কেএস