নীলফামারীতে মাহফিলে অনুমতির জন্য টাকা নেন অফিস সহকারী

আল আমিন, নীলফামারী  প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩, ০৪:১০ পিএম

নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ওয়াজ মাহফিলে অনুমতির কাগজ নিতে অফিস সহকারী আব্দুস সাদিকের টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মুর্হুতের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে পুরো জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, জলঢাকা উপজেলার দক্ষিণ দেশীবাই রাজারহাট কাবাদি রহমানিয়া নুরানি ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার উদ্যোগে তিনদিন ব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠানের অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেএম শাখায় আবেদন করেন মাদ্রাসার সভাপতি আলহাজ্ব মো. ওয়াহিদুর রহমান। তবে কয়েকদিন ধরে অনুমতির কাগজটির জন্য অফিস সহকারী আব্দুস সাদিককে তাগাদা দিলে, তিনি অনুমতি পত্রের জন্য অর্থ দাবি করেন। 

পরে স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল মালেক কাগজটির জন্য গেলে তার কাছেও অর্থ দাবি করেন সাদিক। টাকা নেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে ভিডিও করে রাখেন সাংবাদিক আব্দুল মালেক। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

আব্দুস সাদিক জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেএম শাখায় অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত। এর আগে তিনি একই কার্যালয়ের সংস্থাপন শাখায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১১ সালের ২০ এপ্রিল চাকরিতে যোগদান করেন।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে আব্দুস সাদিককে বলতে শোনা যায়, ‘৫শত টাকার কমে অফ টাইমে কোনো কাজ হবে না। আপনি যদি চান পেপারে উঠে দিবেন, তাও দেন আমরা চাচ্ছি ওটা। কারণ আমার ইমিডিয়েটলি বদলি নেওয়ার কথা এই শাখা থেকে।

এসময় অপর দিক থেকে সাংবাদিক মালেক ২শত টাকা দেওয়ার কথা বললে তিনি বলেন, ২শত টাকায় কোনো কাজ হবে না।

পরে ভুক্তভোগী ব্যক্তি আবারও জিজ্ঞাসা করেন, ‘কত টাকা হলে কাজ হবে। উত্তরে বলেন, ৫শত টাকার কথা কইছি তোক, রাত ১০টার মধ্যে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি দিয়ে তারপর বাড়ি যাব। সেই রকম লোক আমরা।’

অফিস সহকারী সাদিক আরও বলেন, ‘দে দে টাকা দে টাকা দে- রাত ১০টা হইলো কাম হইবে। ৫শত আর মোর হাতোত দিবো ১শত এলায় কাম হইবে।’

পরে ভুক্তভোগী ব্যক্তি ৫শত টাকা দিলে তিনি আরও ১শত টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না চাইলে অফিস সহকারী আব্দুস সাদিক বলেন, ‘তাহলে তোর কাজও হবে না, তো চিঠি অর্ধেক সই হয়া ওই যে ক্যান্টিন পর্যন্ত নিগি থুইবে।’

এ বিষয়ে সাংবাদিক আব্দুল মালেক বলেন, আমি একজন সংবাদকর্মী। সংবাদকর্মী হয়েও যদি জেলা প্রশাসনের কর্মচারি আমার কাছে ঘুষ চায়, তাহলে কেমন হয় না? আমি এটার সুষ্ঠু বিহিত চাই।

অভিযুক্ত অফিস সহকারী আব্দুস সাদিক বলেন, ‘এটা ডিলিট করার কোনো উপায় নাই। আমি ঘুষ নেইনি।’

জানতে চাইলে নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসার পর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি এবং তাকে তার পদবী থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

কেএস