দখল ও দূষণে হুমকিতে রয়েছে বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। গত ১০০ বছরে এই বনের আয়তন কমেছে ৪৫১ বর্গকিলোমিটার। প্রতিনিয়ত শিকার ও নিধন হচ্ছে বাঘ-হরিণসহ নানা বন্যপ্রাণী এবং বনজ-জলজ সম্পদ।
‘বাঁচাই সুন্দরবন-বাঁচাই পরিবেশ, টেকসই হোক আমাদের বাংলাদেশ’ এ স্লোগানে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে মোংলা উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত র্যালি-পূর্ব সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, সুন্দরবনে বাঘ ও হরিণসহ বন্যপ্রাণী নিধন এবং বন ধ্বংসে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে একটি চক্র। সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে ১৭ প্রজাতির মাছের দেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এসব মাছ খেলে মানুষের লিভার ক্ষতিগ্রস্তসহ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বনবিভাগের অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রতিনিয়ত সুন্দরবনের অভয়াশ্রমে বিষ দিয়ে এবং অবৈধভাবে মাছ মারা হচ্ছে। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন সুরক্ষায় মানুষের মুনাফালোভী বনবিনাশী কর্মকাণ্ড রুখতে হবে।
উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সুন্দরবন একাডেমি, ব্লু প্লানেট ইনিশিয়েটিভ (বিপিআই), বাদাবন সংঘ এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এই র্যালি আয়োজন করে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাপা মোংলার আহ্বায়ক মো. নূর আলম শেখ। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপংকর দাশ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ সুনীল কুমার বিশ্বাস, সুন্দরবন জাদুঘরের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জেমস্ শরৎ কর্মকার, সুন্দরবন একাডেমির সুনীতি রায়, বাদাবন সংঘের অজিফা খাতুন, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম লিডার আলমগীর শিকদার, জেলে সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ মন্ডল, বাপা নেতা নাজমুল হক, আব্দুর রশিদ হাওালাদার, কমলা সরকার, ইয়ুথ পিস্ এম্বাসেডর শিকদার ইয়াসিন আরাফাত ও ব্রেভ ইয়ুথ গ্রুপ লিডার শাহ আলম।
সমাবেশে বক্তারা ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস ঘোষণার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসার অঙ্গীকার গ্রহণে সবাইকে আহ্বান জানান।
উল্ল্যেখ্য ২০০১ সালে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ’র উপস্থিতিতে সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।
এআরএস