মাদকের নিরাপদ ট্রানজিট জোন হিসেবে ব্যবহারের কারণে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকা ও কক্সবাজার জেলাকে অতীমাদক প্রবণ এলাকা ঘোষণা করার কথা ভাবছে সরকার। সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে মাদক প্রবেশের সব থেকে বড় এই রুটকে সরকার মাদকপ্রবণ অঞ্চল ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে রূপরেখা তৈরির কাজও চলমান রয়েছে। এই সংবাদে চট্টগ্রাম কক্সবাজার অঞ্চলের সচেতন মহলের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সবার অভিযোগের তীর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দিকে।
তবে পুলিশ প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মাদকের প্রবণতা দমন উদ্ধার বিষয়ে তাদের ব্যর্থতা দেখছেন না বলে মনে করছেন। তাদের সীমানা রেখার বাইরে গিয়ে মাদক উদ্ধারে কাজ করছেন বলে জানান।
এদিকে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো: মজিবুর রহমান পাটওয়ারীর সাথে কথা বলে জানা গেল। তাদের জনবল থেকে শুরু করে ব্যাপক সংকটের মধ্যে চালিয়ে যেতে হচ্ছে মাদক নিয়ন্ত্রণ। যে পরিমাণ জনবল ও অন্যান্য সরঞ্জাম রয়েছে তা দিয়ে সামর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প দেখছেন না তিনি। জনসচেতন বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি এলাকায় টিম গঠন করছেন বলে জানান।
বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, মাদকের প্রবণতা বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ সোর্স মানির অভাব। যার কারণে অপ্রিয় হলেও সত্য মাদক উদ্ধারের পর সোর্সদের নির্দিষ্ট সংখ্যক মাদক দিয়ে দিতে হয় বলে জনশ্রুত রয়েছে।
এছাড়া বর্তমান সময়ে মাদক বিক্রেতারা তাদের কৌশল পরিবর্তন করেছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি কৌশল অবলম্বন করেন মাদক বিক্রেতা নিজের শরীরের পেটের ভিতর করে ইয়াবা নামক মাদক নিয়ে আসেন বলে জানান মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক। কতজন মানুষের পেটে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা সম্ভব।
এছাড়া ডাক্তাররা সাক্ষী হতে চায় না। ফলে পেটের ভিতর করে নিয়ে আসা ইয়াবা মামলায় সমস্যা হয়ে যায়। মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে উদ্ধার করা মাদকের মধ্যে ইয়াবা গাঁজা চোলাই মদ বিয়ার ডিনেচাড ফেনসিডিল উদ্ধার করেছেন। এরমধ্যে ২০৫৭ অভিযানের মধ্যে ৩৩৩ মামলায় ৩৬৭ জন আসামির মধ্যে আটক ৩৪৩জন এবং পলাতক ২৪ জন রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশের সর্বশেষ মাদক উদ্ধার ও আটকের পরিসংখ্যানে মোট মামলা ৭৬৪ এর মধ্যে ৯৬৪ জন আটক করেছেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে ২১৬৫৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেন এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশের উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে ৩২৬৫২৬ পিস ইয়াবা রয়েছে।
মাদক উদ্ধার বা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ অধিদপ্তর নামে রয়েছে কাজে কোন কিছু দেখাতে পারছেন না। কাজে না দেখার পেছনে যথেষ্ট পরিমাণ জনবল সংকট সোর্স মানির অভাব ও বিভিন্ন মামলায় সাক্ষীর অভাব।
তবে এর মধ্যে সংকট সমস্যা সমাধান করতে পারলে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর শতভাগ মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন বলে আশাবাদী মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক। যার কারণে তাদেরকে বলা হচ্ছে, ঢাল নেই তরোয়াল নাই নিধিরাম সর্দার।
কেএস