নীলফামারীতে ভুয়া অভিভাবকে বিদ্যালয়ের সভাপতি করে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

আল-আমিন, নীলফামারী প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২৩, ০৪:১৭ পিএম

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার সিঙ্গেরগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে ভুয়া অভিভাবক সদস্য নাজমুল ইসলামকে সভাপতি মনোনীত করে নিয়োগ বাণিজ্যর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অপর দুইজন অভিভাবক সদস্যসহ শতাধিক অভিভাবক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দেওয়ার জন্য বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রী লিজা আক্তারের প্রকৃত অভিভাবক লাবলু মিয়া। তাকে বাদ দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর ভুয়া জন্মসনদ করে নাজমুল ইসলামকে ভোটার তালিকাভুক্ত করেন। প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে আতাত করে নির্বাচনের পরিবর্তে গোপনে সিলেকশনের মাধ্যমে ভুয়া অভিভাবক সদস্য নাজমুলকে সভাপতি বানিয়ে প্রধান শিক্ষক ১০ সদস্যের কমিটির অনুমোদন নেন।

এদিকে মাগুড়া ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া প্রত্যয়নপত্রে লিজা আক্তারের প্রকৃত অভিভাবক লাবলু মিয়া। এছাড়া বিদ্যালয়ে দাখিলকৃত জন্মসনদ অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীর জন্ম তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১০। কিন্তু বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আব্দুল মজিদ ছোট্ট এর মেয়েকে দিয়ে নাজমুল ইসলামের বিয়ে হয় ২৯ আগষ্ট ২০১১। তাই নাজমুল ইসলাম কোন ক্রমেই লিজা আক্তারের অভিভাবক হতে পারেন না।

বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য পর পর ৩ বার সভাপতি হওয়ায় বিধি অনুয়ায়ী ৪র্থ বার সভাপতি হতে পারেন না। এজন্য প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে তার জামাতা নাজমুল ইসলামকে ভুয়া অভিভাবক বানিয়ে সভাপতি করেন। গত মাসে বিদ্যালয়ের আয়া, নৈশ্য প্রহরী ও অফিস সহায়ক পদে ৩ জনকে নিয়োগ দিয়ে সভাপতি, প্রধান শিক্ষক ও দাতা সদস্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।  

এ ব্যাপারে সিঙ্গেরগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, জন্ম সনদ অনুযায়ী লিজা আক্তারের অভিভাবক বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। প্রকৃত অভিভাবক কিনা সেটা জানি না। পরিকল্পিতভাবে কারসাজির বিষয়টি তিনি  আংশিক স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে সভাপতির সঙ্গে কথা বলেন।

উক্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাজমুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি লিজা আক্তারকে তার মেয়ে দাবি করেন। কিন্তু তার বিয়ের প্রায় দেড় বছর আগে শিক্ষার্থী লিজা আক্তারের জন্মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিয়ের কাবিন আপনার কাছে আছে। হোয়াটসঅ্যাপে পাঠায় দেন তার পর এ বিষয়ে কথা বলব।

জানতে চাইলে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল ইসলাম বলেন, ৫ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট সহ অভিযোগের বিষয়টি অবগত হয়েছি। বিষয়টির তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কেএস