লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ঢাকা যাওয়ার বাস ভাড়া নিয়ে ঝগড়ার জের ধরে স্ত্রী নীলা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলায় সুমন উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
অপরদিকে রায়পুর উপজেলায় ৫৫ পিস ইয়াবা রাখার দায়ে সোহেল হাওলাদারের ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। একই মামলায় ২০০ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেপ্তার মাসুম হাওলাদারকে ১ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত। একইসঙ্গে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সোমবার (৬ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
স্ত্রী নীলা আক্তার হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সুমন রামগতি উপজেলার বড়খেরী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের নাছির উদ্দিনের ছেলে ও পেশায় চা দোকানি ছিলেন। এরআগে তিনি নরসিংদী জেলা সদরের একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সেই সূত্রে নরসিংদীর শিলমাদ্রী ইউনিয়নের বাগহাটা গ্রামের ওমর আলীর মেয়ে নীলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে হয় তাদের।
মাদক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল রায়পুরের চরপক্ষী গ্রামের আবু বকর হাওলাদারের ছেলে ও মাসুম একই এলাকার মিজানুর রহমান হাওলাদারের ছেলে।
আদালত ও হত্যা মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা যাওয়ার জন্য বাস ভাড়া চাওয়ায় সুমনের সঙ্গে ভিকটিম নীলার সঙ্গে ঝগড়া হয়। এনিয়ে সুমন তাকে মারধর করে। তবে স্ত্রী বায়না ধরেছে তাকে টাকা দিতে হবে। এতে ঘুমের মধ্যে স্ত্রীকে তিনি শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে পরনের কাপড় খুলে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখেন। এরপর ঘরের বাইরে থেকে রড দিয়ে দরজার সিটকারি লাগিয়ে দিয়ে স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালানো হয়। তবে নিহতের পা ফ্লোরে ও হাত খাটে ছোয়া ছোয়া অবস্থায় ছিল। এতে ঘটনাটি সন্দেহজনক হয়। এতে পরদিন ভিকটিমের ভাই মাহবুব মিয়া বাদী হয়ে রামগতি থানায় মামলা দায়ের করেন। একইদিন আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মাদক মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল আসামিরা রায়পুরের উত্তর চরাবাবিল ইউনিয়নের চরপক্ষী গ্রামের একটি কবরস্থানের পাশে মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে অভিযান চালানো হয়। আসামিরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানো চেষ্টা করলে তাদেরকে আটক করা হয়। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় প্রদান করেন।