শিক্ষকদের অশ্লীল আচরণ, অনিয়মিত ক্লাস করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ করেছে লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৮ মার্চ) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় বিভিন্ন দাবি উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জহিরুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা বিভিন্ন অজুহাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে অশ্লীল আচরণ করেন। এবিষয়ে বারবার জানানো হলেও অধ্যক্ষ কোন পদক্ষেপ নেননি। স্মারকলিপিতে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেয় শিক্ষার্থীরা।
এরআগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন দাবীতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছিলো সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তখন অধ্যক্ষ তাদের দাবী পুরণের আশ্বাস দিলে তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। কিন্তু পরর্বতীতে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতেও শ্লোগান দেয়।
স্মারকলিপি সূত্রে জানা গেছে, গত (২ মার্চ) বুধবার ৪র্থ পর্বের ১ম শিফটের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা চলছিলো। এসময় হঠাৎ করে কম্পিউটার বিভাগের চীপ ইনষ্ট্রাক্টর (টেক) আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ মুসফিকুর রহমান শিক্ষার্থীদের বলেন, তোমরা দেখাদেখি করে লেখো, তোমাদের মা-বাবার (অশ্লীল ভাষা...) সমস্যা ছিলো। তাই তোমরা এমন করো। জন্ম থেকেই তোরা হারাম হয়ে এসেছিস। তোদের বাবা-মা`র রক্ত হারাম। এছাড়া মেয়েদের বাসঘরের গোপনীয়তা নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিষ্ঠানে এসেছি পড়ালেখার পাশাপাশি নৈতিকতা ও শিষ্টাচার শিখতে। কিন্তু ওনার আপত্তিকর এসব মন্তব্যে শিক্ষার্থীদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। তাই তারা ক্ষুব্ধ। এজন্য আমরা এই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছি। পাশাপাশি তার অব্যহতি ও শিক্ষার্থীদের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ মুসফিকুর রহমান জানান, একটি পক্ষ আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। সকালেই ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। আমি সমস্যার সমাধান করবো। তবে স্মারকলিপিটি সাংবাদিকদের দেখানো সম্ভব নয়।
উল্লেখ, লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয়ের প্রায় ৩ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার বাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার পাঁয়তারা চালানোর অভিযোগ উঠে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ওই প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষককে সাথে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সরাসরি বাগবাটোয়ারা করে নেওয়ার পাঁয়তারা করছেন বলে টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন।