নান্দাইলে আবাসন প্রকল্পের বেহাল দশা

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২৩, ০৫:২৫ পিএম

ময়নসিংহের নান্দাইল উপজেলার ১১নং খারুয়া ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে ২০০৪ সালের ১৫ই জানুয়ারি ২৪০টি ঘর নিয়ে স্থাপিত হয়েছিল মহেশপুর আবাসন প্রকল্প। সরকারি খাস জায়গায় মাটির ভিটেতে টিনের বেড়া ও টিনশেডের সারিসারি ঘরে অনেক স্বপ্ন নিয়ে সুখের নীড় বেধেছিল বাস্তুহারা মানুষগুলো।

তবে এখন বেড়া ও টিনশেডে মরিচা ধরে নষ্ট হওয়ার পথে এসব আবাসনের ঘরগুলো। একটু বৃষ্টি হলেই ছোট্ট শিশু ও বৃদ্ধ সদস্যদের নিয়ে ঘরের এক কোনায় ঘুটিয়ে বসে থাকতে হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানি রুখতে ভাঙা ও ফুটো টিনের চালার উপর পলিথিন কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে। পলিথিনের উপর ইট বেধে রাখা হয়েছে যাতে তা ঝড়ে উড়ে না যায়। অন্যথায় বৃষ্টির পানিতে মানুষগুলোর জামা-কাপড় ও বিছানাপত্র সব ভিজে একাকার হয়ে যায়।

এছাড়া স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে আবাসনে থাকা মানুষগুলোর স্বাস্থ্য সমস্যাসহ নানাবিধ দূর্ভোগ পোহাতে হয়।  অনেকেই ভাঙ্গা ঘরে থাকতে না পেরে ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।

আবাসন স্থাপনা নির্মাণের ২২টি বছর পার হয়ে গেলেও এর কোন সংস্কার বা উন্নয়ন হতে দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যকর্মকর্তাসহ অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের এখন আর আবাসনে তাদের দেখা মিলে না। মানুষগুলো সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দুটি ঈদ উৎসব আসলে নামমাত্র কিছু লোককে ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল দিয়ে থাকেন। অপরদিকে আবাসনে বেড়ে উঠা শিশু-কিশোররা শিক্ষার আলো পেতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক দূরে স্কুলে যেতে হয়। আবাসনের যাবার রাস্তারও বেহাল দশা।

আবাসনের সাবেক সভাপতি সাদেক মিয়া ও সদস্য দীপা আক্তার বলেন, নতুন করে ঘর নির্মাণসহ আবাসনের স্থানে সরকারিভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন এবং আবাসনের নারী-পুরুষদের জন্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করলে মানুষগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসনাত মিন্টু বলেন, ঘরের অবস্থা সম্পর্কে আমি একাধিকবার প্রতিবেদন দিয়েছি। এছাড়া আমার পরিষদ থেকে যথাসাধ্য সম্ভব সরকারি-সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছি। প্রতি ঈদের তাদের জন্য ৮০টি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ দিয়ে থাকি।

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল মনসুর বলেন, মহেশপুর আবাসনের ব্যাপারে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। যাতে দ্রুত সংস্কার করা হয়। এছাড়া তারা যেন অন্য সুবিধা পায় সেজন্য দৃষ্টি থাকবে।

এমএইচআর