সাতক্ষীরার আম ইউরোপে রপ্তানির অপেক্ষায়

কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৩, ০৪:০২ পিএম

এ বছর আমের জন্য সেরা বর্ষ ধরা যায়। কারন এ বছর পোকামাকড় ও ঝড়বৃষ্টিতে তেমন ক্ষতি হয় নাই। সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় ছোট-বড় মিলে মোট ৬২৯টি আম বাগানে আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কালিগঞ্জ উপজেলায় এবার মোট ৫২৭ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এছাড়াও ছোট-বড় অসংখ্য বাগান ব্যক্তি উদ্যোগে চাষ করেছেন স্থানীয় বার্গা চাষিরা। 

ইতিপূর্বে আম চাষ বাজারজাতকরণ ক্যালেন্ডার বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরার সভাপতিত্বে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সংগতি রেখে কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত আম ব্যবসায়ীদের সাথে মত বিনিময় ও আমের সঠিকতা যাচাই ও পাকা আম পরীক্ষা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহিমা সুলতানা বুশরা। 

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওয়াসিম উদ্দিন। সভায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরা কর্তৃক সিদ্ধান্তের একাত্মতা প্রকাশ করে বাজারজাতকরণ আম ক্যালেন্ডার জানানো হয়। 

১২ মে থেকে গোপাল গোবিন্দ ভোগ, বোম্বাই, গোলাপ খাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম পড়া যাবে। ২৫ মে থেকে হিমসাগর আম, ও ১ জুন থেকে ল্যাংড়া আম ও ১৫ জুন থেকে আম্রপলি আম বাজারজাতকরণের জন্য আমপাড়া হবে। 

আমের জাত ও আম সংগ্রহের তারিখ জানানোর পরও যে সমস্ত আম ব্যবসায়ী অপরিপক্ক আম পেড়ে বাজারজাত করবে এবং ক্রেতা সাধারণের সাথে প্রতারণা করবে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহিমা সুলতানা বুশরা জানান। 

এছাড়া আম ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক সচেতন সৃষ্টির জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ আম ব্যবসায়ীদের এলাকাভিত্তিক ইউনিয়ন পরিষদের মতবিনিময় সভার আয়োজন করবে। 

উল্লেখ্য যে, দেশের বাজারে আগে থেকেই সুনাম রয়েছে কালিগঞ্জ উপজেলাসহ সাতক্ষীরার আমের। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সাতক্ষীরার আমের সুনাম ও চাহিদা ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারেও। মাটি ও আবহাওয়াজনিত কারণে সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। স্বাদে, গুণে অনন্য হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরেই সাতক্ষীরার আম রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। জেলার গোবিন্দভোগ, ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আম্রপালি আম রপ্তানি হয় ইতালি, জার্মানী, ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সে। 

কালিগঞ্জ উপজেলা সিনিয়ার কৃষি অফিসার মো. ওয়াসিম উদ্দিন বলেন, এবার কালিগঞ্জ উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোতে আম রপ্তানির জন্য আন্ডার প্রসেসিং আছে। 

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, "গাছ থেকে পরিপক্ক আম ভাঙার জন্য দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বাইরে আম পেড়ে কার্বাইড দিয়ে বাজারজাত করণের চেষ্টা করলে আম বিনষ্টসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপরিপক্ক আম বাজারজাতকালে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। আমের মৌসুমজুড়ে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।"

এইচআর