২০১২ সালের ৩ জুলাই আমিনুল ইসলাম বকুলকে আহ্বায়ক, মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল ও রুহুল আমিন খানকে যুগ্ম আহবায়ক করে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
৯০ দিনের ওই আহ্বায়ক কমিটি পার করেছে প্রায় সাড়ে ১১ বছর। এর মধ্যে হয়নি জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি। একই অবস্থা উপজেলা যুবলীগের কমিটিগুলোতেও। প্রায় সবগুলো উপজেলাতেই দীর্ঘদিন ধরে নতুন কমিটি নেই। যার ফলে ঝিমিয়ে পড়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বকুল জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দ্বায়িত্ব পেয়েছেন। এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে জেলা যুবলীগ মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় যুবলীগের রাজনীতি থেকে নিস্ক্রিয় হয় জেলার অনেক নেতৃবৃন্দ। পরে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশনায় যুবলীগ কিছুটা গতি পায়। পদ প্রত্যাশার আশায় বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে জাতীয় ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে।
দীর্ঘ প্রায় একযুগ পর কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়ে গত ১২ জানুয়ারি যুবলীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৬ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে যুবলীগের প্রধান কার্যালয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও সর্বশেষ শিক্ষা সনদের ফটোকপিসহ জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে বলা হয়।
এর আগে ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় জেলা যুবলীগের সম্মেলনের কোন সিদ্ধান্ত হয় নি।
এদকে নতুন কমিটিতে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগে নতুন এক চমকের অপেক্ষা করছেন তৃণমূল কর্মীরা। জেলা কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে চলছে শীতল লড়াই। যুবলীগের বর্তমান নেতারা ছাড়াও এ পদ দুটিতে উঠে এসেছে ছাত্রলীগের একাধিক সাবেক নেতার নাম। আর পদ প্রত্যাশীদের প্রচারণায় শহরের অধিকাংশ বিলবোর্ডগুলো ছেয়ে গেছে।
দীর্ঘদিন পর নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। ইতোমধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের শীর্ষ পদ পাওয়ার জন্য প্রায় ডজন খানেক নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। পদ প্রত্যাশীরা প্রায় সবাই রাজনীতির মাঠে সরব রয়েছেন।
যোগাযোগ রাখছেন উপজেলা পর্যায়ের সম্ভাব্য কাউন্সিলরদের সঙ্গেও। তবে সব ছাপিয়ে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে নির্ধারিত হতে পারে কে কে হবেন আগামী দিনের জেলা যুবলীগের কাণ্ডারি। যুবলীগের বর্তমান নেতৃৃত্ব নাকি ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা এ পদে আসবেন- তা অনেকটাই নির্ভর করছে তাদের ব্যক্তিগত আমলনামার ওপর।
সভাপতি-সম্পাদক পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকাও দীর্ঘ। আলোচনায় আছেন প্রায় ডজন খানেক নেতার নাম। যারা ইতিমধ্যে পদ প্রত্যাশায় নিজেদের জীবন বৃত্তান্ত কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দিয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। জনমনে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কে হচ্ছেন কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সম্পাদক।
সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আহ্বায়ক, জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য বাছির উদ্দিন রিপন, এছাড়াও বর্তমান জেলা যুবলীগ কমিটির ২ জন যুগ্ম আহবায়ক আমিনুল ইসলাম মীর সোহেল ও রুহুল আমিন খান সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন।
এছাড়াও সভাপতি পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা আশিক জামান এলিনসহ অনেকেই। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ১নং সদস্য রাশেদ জাহাংগীর পল্লব।
এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম হুমায়ুন, জেলা যুবলীগের সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুল ইসলাম উজ্জ্বল।
এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদে জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা লেলিন রায়হান শুভ্র শাহীন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সৈয়দ আফাকুল ইসলাম নাটু, সাবেক ছাত্রনেতা মাহফুজুর রহমান মাহফুজ, সাবেক ছাত্রনেতা মল্লিক রাজন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিমন ঢালী, সাবেক ছাত্রনেতা সামিউল হাসান চৌধুরি লিমনসহ অনেকেই।
জেলা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী বাছির উদ্দিন রিপন বলেন, যুবলীগের বর্তমান চেয়ারম্যান পরশ ভাইয়ের নেতৃত্বে সংগঠনের আলাদা ইমেজ তৈরি হয়েছে। আমি সেই ইমেজ কাজে লাগাতে চাই। দায়িত্ব পেলে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে সংগঠনকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করবো।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী রাশেদ জাহাংগীর পল্লব বলেন, কারা সংগঠনের জন্য কাজ করছেন, কর্মীরা ভালো জানেন। নেতৃত্ব পেলে যুবলীগকে আরও শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করা হবে।
এআরএস