ময়মনসিংহের ত্রিশালের সেবিকা সেলিনা গত ৩০ বছরে নরমাল ডেলিভারি করেছেন প্রায় ১২ হাজার প্রসূতির। উপজেলা জুড়েই সেলিনা আপা নামে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে তা। মানব সেবাই যেন তার জীবনের পরম ধর্ম।
বর্তমানে তার সাথে সঙ্গী হিসেবে কাজ করে চলেছেন সেবিকা পুত্রবধূ শাহিদা আক্তার। বর্তমানে মানব সেবা করে এখন ব্যাপক পরিচিত গরীবের সেবিকা হিসেবেই পরিচিত বউ-শাশুড়ি।
ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স ত্রিশ বছর যাবৎ মানব সেবা করে মানুষের অন্তরে আজ সবার মাঝে সেলিনা আপা নামে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। ত্রিশ বছরে প্রায় ১২ হাজার নরমাল ডেলিভারি করে সুনাম অর্জন করেছেন। মানব সেবায় এখন পাশে আছেন সেলিনা আক্তারের এক মাত্র পুত্রবধূ শাহিদা আক্তার।
তার পুত্রবধূ শাহিদা আক্তার ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিডওয়াইফ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বউ-শাশুড়ির সেবা দান এখন সবার মুখে আলোচিত। নরম মেজাজের সেবিকা সেলিনা আক্তার চাকরির পাশাপাশি ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাত দিন মানব সেবার কাজে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আত্মতৃপ্তির কথা জানালেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সেলিনা আক্তার বলেন, মানুষের সেবা ব্রত নিয়েই এ সেবাই নিজেকে নিয়োজিত করি। মানুষকে সেবা দিতে আমার অনেক ভাল লাগে। কি পেলাম, না পেলাম এটা কোন বিষয় নয়। চাকরি জীবনের পুরোটাই মানুষকে সেবা দিয়েছি। আর দুই বছর চাকরি আছে সে সময় টাতে আল্লাহ যদি সুস্থ রাখে মানুষের সেবা করেই যাবো। সবার কাছে সুস্থতার জন্য দোয়া চাই।
সেলিনা আক্তার আরও বলেন, কবি নজরুলে স্মৃতি বিজড়িত সরকারি নজরুল একাডেমীর সাবেক প্রধান শিক্ষক বিশিষ্ট সাহিত্যিক এ, এস এম আব্দুল করিমের পাঁচ বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে সেলিনা আক্তার দ্বিতীয়। বাবার স্বপ্ন ছিল মানব সেবা করার ।
বাবাকে হারিয়েও যেন মানব সেবায় বাবাকে খুঁজে পাই। সংসার জীবনে স্বামী আনোয়ার হোসেন খান ডিএইচএমএস ডাক্তার, একমাত্র ছেলে জিম্মানুল আনোয়ার বিবিএ কমপ্লিট করে সাংবাদিকতার পেশায় জড়িত। স্বামী পুত্রবধূ একমাত্র নাতি শাহরানকে নিয়ে সুখের সংসার। বাকী জীবন মানব সেবা করে কাটাতে চান সেবিকা সেলিনা ও তার পুত্রবধূ। গরীব অসহায় রোগীরাই যেন তার আত্মার আত্মীয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, আমার হাসপাতালের নার্স সবাই ভালো। সেলিনা আক্তার সিনিয়র নার্স। সে হাসি মুখে সব কাজ সময়মত করে থাকেন। করোনাকালীন সময় তিনি ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন।
এইচআর