মহেশপুর উপজেলার বাশবাড়ীয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা জিন্টুর বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ তোলা ওয়ান পারসেন্টের ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা পরিষদে টাকা উত্তোলনের রেজুলেশন থাকলেও ইউনিয়ন পরিষদে ওই টাকার কোন হসিদ নেই। গত ২১-২২ অর্থ বছরে চৌদ্দ লাখ ৫০ হাজার ও ২২-২৩ অর্থ বছরে আঠার লাখ টাকা মিলে সর্বমোট বত্রিশ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান জিন্টু।
ইউনিয়ন পরিষদের ওই টাকার মধ্যে হতে ২১-২২ অর্থ বছরে আলহাজ মফিজউদ্দিন রুলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণ কাজে দুই লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন। তবে গ্যারেজ নির্মাণ না করেই প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান জিন্টু। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গত ১৭ মে বিভাগীয় কমিশনারের তদন্ত আসার দিন নিধারিত হলে ওই স্কুলের সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণ করতে গেলে এলাকাবাসীর বাধার মুখে তা করতে পারেননি। মকরধজপুর গ্রামের ড্রেন নির্মাণে আরো দুই লাখ ব্যয় দেখিয়েছেন তিনি। তবে ওই প্রকল্পের সভাপতি ওয়ার্ড মেম্বর আলী আবজালের স্বাক্ষর জাতিয়াতি করে টাকা উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান। কোন কাজ না করে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ইউপির সদস্যরা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। গাড়াপোতার মামুনের বাড়ি হতে মজিদের বাড়ি পর্যন্ত বিলের রাস্তার দুই লাখ টাকার প্রকল্পের কাজ পুরোটায় অসমাপ্ত রয়েছে। মাত্র ১দিনে ৩ঘন্টা ভেকু দিয়ে কাজ করে ওই টাকা উত্তোলন করছেন চেয়ারম্যান জিন্টু।
ভাবদিয়া-গাড়াপোতা সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয়ে ২৫ টি ফ্যানের প্রকল্প দিয়ে টাকা উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান। কিন্ত ওই বিদ্যালয়ে কোন ফ্যান দেওয়া হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজাহান আলী ফ্যান পেয়েছেন মর্মে প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছেন।
ওয়ার্ড মেম্বার শাহাজাহান আলী জানান, ওয়ান পারসেন্টে প্রায় বত্রিশ লাখ ৫০ হাজার টাকা এসেছে এটা জানি। কিন্তু চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে মেম্বারদেরকে কিছুই জানাইনি। শুধু ২ টা প্রকল্পে ৪ লাখ টাকার কথা জানা আছে। তবে এর মধ্যে সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণের কাজ হয়নি ও ড্রেন নির্মান প্রকল্পের সভাপতির স্বাক্ষর জাতিয়াতি করে চেয়ারম্যান টাকা উত্তোলন করেছেন।
ওয়ার্ড মেম্বার নাসির উদ্দিন বলেন, ওই স্কুলের সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণ কাজে যে আমাকে সভাপতি করা হয়েছে এটা আমার জানা ছিলো না। চেয়ারম্যান আমাকে না জানিয়ে আরো প্রায় ১২ লাখ টাকার প্রকল্পে সভাপতি বানিয়েছে। সেই সব প্রকল্পে আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে টাকাও উত্তোলন করেছেন।
ওয়ার্ড মেম্বার আজিজুর রহমান জানান, ওই প্রকল্পে চেয়ারম্যানের খালাতো ভাইয়ের ভেকু দিয়ে মাত্র ১দিনে ৩ঘন্টা রাস্তার কাজ করেছে।
চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা জিন্টু বলেন, প্রকল্পের কাজ, বত্রিশ লাখ টাকা ও মেম্বারদের অনাস্থসহ সকল বিষয়ে জেলা ও বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষে সবকিছুর প্রমাণ হবে।
আরএস