হাটহাজারীর ১৪ স্থানে বসছে কোরবানি পশুরহাট

মো. সাহাবুদ্দীন সাইফ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩, ০৬:২৭ পিএম

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে জমে উঠেছে কোরবানি পশুরহাট, দামাদামি করে চলছে বেচাকেনা। উপজেলার ১৪টি স্থানে বসছে স্থায়ী ও অস্থায়ী কোরবানির পশুরহাট।

এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ছোট বড় পাঁচ শতাধিক খামারে প্রস্তুত রয়েছে আটত্রিশ হাজার পাঁচশত বিরানব্বইটি গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ। তারমধ্যে ২৯২১৬টি গরু, ১১৪৫৩টি ছাগল ও ভেড়া এবং ৩১৯১টি মহিষ রয়েছে।

এছাড়া বিভিন্ন খামারে প্রায় ৪৮৯০টি পশু লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে হাজারের অধিক গরু। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে পৌরসভা এলাকার প্রাচীনতম গরুর বাজারটি স্থায়ীভাবে থাকলেও ইজারা নিয়ে অস্থায়ীভাবে বসছে পৌরসভার মীরেরহাট বাজার।

এছাড়া উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ইজারা নিয়ে অস্থায়ী কোরবানি পশুরহাট হিসেবে আরো বসছে উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের নূর আলী মিয়ারহাট, হাজী জব্বার হাট, উদালিয়া আকবর সওদাগর ঘাটা ও ছোট কাঞ্চনপুর মাদ্রাসা মাঠ বাজার, ধলই ইউনিয়নের কাটিরহাট বাজার, মির্জাপুর ইউনিয়নের চারিয়া নয়াহাট বাজার, সরকারহাট বাজার ও মুহুরি হাট বাজার, মেখল ইউনিয়নের ইছাপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বাজার, দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের মধুনাঘাট বাজার, গড়দুয়ারা ইউনিয়নের কান্তর আলী চৌধুরী হাট এবং উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের সৈয়দ আহমদ হাট।

তাছাড়া কোরবানির কয়েকদিন আগে থেকে স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীরা জমিয়ে তুলেন হাটহাজারী থানাধীন চসিক ১নং ওয়ার্ডের চৌধুরীহাট ষ্টেশন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেশের উত্তরবঙ্গ থেকে বিভিন্ন জাতের গরু এসে হাটবাজার পরিপূর্ণ। পেশাদার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও নিজগৃহে লালনপালন করে বিক্রয়ের আশায় গরুছাগল হাটে তুলছে। তবে হাটে পশু কেনার চেয়ে দেখার লোক বেশি।

ব্যবসায়ীরা বলেন, বাজারে ১০০জন গরু দেখলে কিনে ১০জনে। বড় গরুর চেয়ে মাঝারী গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় তার দামও চওড়া। তারপরেও নিজেদের সামর্থ্যানুযায়ী ক্রেতাসাধারণ তাদের পছন্দমত গরু কিনছেন। গরুর খাদ্যের দাম ও হাটে গরু রাখার ভাড়াসহ সব খরচেই আগের থেকে বেশি। এবার হাটে ভারতীয় ও নেপালি কিছু গরু দেখা গেছে।

এসব গরু অনেক আগে ভারত থেকে এনে লালন-পালন করা হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এর সংখ্যা একেবারেই হাতেগোনা। গরু বেচাকেনা কেমন হচ্ছে, জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, এবার বেচাকেনা এখনো পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণ হচ্ছেনা। ঈদের দুইএকদিন আগে থেকে গরু বিক্রি হবে এমনটাই প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।

এবিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার সুজন কানুনগো বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত খামারে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ রয়েছে। এসব খামারে আমাদের ইউনিয়ন পর্যায়ের চিকিৎসক দল কোরবানি পশু গুলোর প্রতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে।

এছাড়া স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে বসা কোরবানি পশুরহাট গুলোতে পর্যবেক্ষণের জন্য ৫টি চিকিৎসক দল রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এবার লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগে গরু আক্রান্ত হওয়ার কারণে খামারিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।৯র এই রোগের আক্রান্ত হলে সুস্থ হতে বেশ সময় লাগে।

রোগটি অনেক আগে দেখা গিয়েছিল, পরে গত কয়েক বছর কম হলেও এখন আবারো দেখা যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিদুল আলম বলেন উপজেলার বিভিন্নস্থানে অস্থায়ীভাবে কোরবানির পশুরহাট বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। 
যানজট নিরসন ও জনদুর্ভোগ লাঘব করতে মহাসড়কে কোরবানির পশু তুলতে দেওয়া যাবেনা। যদি কেউ তুলে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এইচআর