গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ঘেরের লোনা পানিতে আশাশুনির খাজরা, বড়দল ও শ্রীউলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমিতে আমন ধান চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়েছে। বৃষ্টির পানি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার লবণ পানির ঘের প্লাবিত হওয়ায় চারিদিকে লোনা পানির ঢেউ থৈ থৈ করছে।
যে কারণে সম্ভাব্য ক্ষতির আকাঙ্ক্ষায় এক ফসলি এসব চাষীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। ঘের মালিকদের উদাসীনতায় আমন চাষাবাদের এসব এলাকার অনেকদিন আগে থেকেই লোনা পানি ঢুকছে তবে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন অভিযোগ করে আসছিল।
গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে চাষীরা দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এলাকার একমাত্র পানি নিষ্কাশনের মাধ্যম কালকীর সুইস গেটের নদী ও ভেতরের অংশে অতিরিক্ত পলি জমে এসব পানি সরবরাহ কার্যক্রম বন্ধ আছে।
এছাড়া পানি নিষ্কাশনের খাল গুলোতে অবৈধ নেট পাটা দিয়ে পানি সরবরাহ বন্ধ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত কালকীর সুইসগেটের পলি অপসরণ বা বিকল্প যে কোন উপায়ে দ্রুত পানির নিষ্কাশনের ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গজুয়াকাঠি বিলে গিয়ে দেখা যায়, রাউতাড়ার মিনি কালভার্ট থেকে গজুয়াকাঠীগামী বিলের ভিতরের রাস্তা গোয়ালডাঙ্গা, পিরোজপুর বিলের তীব্র লোনা পানি মিশ্রিত রাস্তা ছাপিয়ে দ্রুত গতি ছাপিয়ে পড়েছে গজুয়াকাঠি বিলে। রাউতাড়া উত্তর বিলের মৎস্য ঘের মালিকদের লোনা পানি কালকীর খালে ফেলে দেওয়ায় গজুয়াকাঠি বিলে লবণ পানি ও বর্ষার পানিতে থৈ থৈ করছে।
নিচু এলাকার বেশ কিছু মানুষের তরকারির ক্ষেত পুকুরের পানিতে তলিয়ে গেছে। মৎস ঘেরের লবণ পানি ধানের জমিতে প্রবেশ করায় ওই এলাকার একমাত্র ফসল আমন ধান চাষাবাদে প্রান্তিক কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে স্থানীয়রা জানান।
লোনা পানিতে বড়দল ইউনিয়নের পাঁচপোতা ও দক্ষিণ বড়দল বিলে এবং খাজরা ইউনিয়নের ফটিকখালি, গজুয়াকাঠি রাউতারা বিলের প্রায় ১০ হাজার বিঘা পানিবন্দি হয়ে আছে। যদি কালকীর সুইস গেটের পলি অপসারণ করা না হয় তবে হাজরা ইউনিয়নের খালিয়া, পিরোজপুর, দুর্গাপুর, গোয়ালডাঙ্গা বিলে একই অবস্থার শিকার হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
এদিকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক অসীম বরণ চক্রবর্তী, খাজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে।
অসীম বরন চক্রবর্তী জানান, তীব্র লোনা পানি মিশ্রিত খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের আমন চাষাবাদের কয়েকটি বিলে জমে যাওয়ায় প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমিতে আমন ধানের ফসল হুমকির মুখে পড়েছে। আমরা এলাকায় বসে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাথে বলেছি। সমস্যা সমাধানে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলব।
আশা করি দ্রুতই পানি নিষ্কাশন সমস্যার সমাধান হবে। কালকীর সুইসগেটের পলি অপসরণ, অবৈধ ভাবে লোনা পানি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, খালে অবৈধ নেটপাটা অপসারণ করে এলাকার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে আমন ধান চাষীদের পাশে দাঁড়াতে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার আ ফ ম রুহুল হক এমপি, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী।
এইচআর