দিন দিন বেড়েই চলছে বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও। এ পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনই নারী। ১০ জুলাইয়ের পর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়তে শুরু করে। ২০ জুলাইয়ের পর থেকে পরিস্থতির অবনতি ঘটেছে। প্রতিদিন সরকারি হাসপাতালগুলোতে গড়ে প্রায় পৌনে ৩শ রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
মঙ্গলবার সকালের পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায়ও প্রায় ২৬০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এ পর্যন্ত সর্বাধিক সংখ্যক রোগী ভর্তি ও মৃত্যু হয়েছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
৩১ জুলাই পর্যন্ত শেবাচিমে ৮ জনের মৃত্যু ও ১ হাজার ৫৬৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভার্তি হয়েছেন। এছাড়া জেনারেল হাসপাতালসহ বরিশালের অন্যান্য উপজেলাতেও আরো প্রায় ৭শ ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি হয়েছে ইতোমধ্যে।
ভোলা জেনারেল হাসপাতালে দুজন এবং বরগুনা হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন পৌরসভাগুলোর মশক নিধন কার্যক্রম খুব জোরালো নয়।
বরিশাল মহানগরীর ৫৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডর জন্য মাত্র ১২টি ফগার মেশিন নিয়ে মশার বিরুদ্ধে লড়াই করছে নগর ভবন। এছাড়া কিছু হ্যান্ড স্প্রেয়ার দিয়ে নগরীর ওয়ার্ডগুলোতে মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালিত হলেও মশার ওষুধের মান সম্পর্কে নগরবাসীর মনে নানা প্রশ্ন উঠছে। ফগার মেশিনে স্প্রে করার সময় কালো ধোয়া ও কেরোসিনের গন্ধে অনেকেই নানা প্রশ্ন করছেন।
পরিস্থিতি উন্নয়নে বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো পৌরসভাকে অবিলম্বে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি মশক নিয়ন্ত্রনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকেও মশক নিধনসহ এর বংশ বিস্তার প্রতিরোধে করণীয় সম্ভব সব কিছু অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার সরকারী হাসপাতালগুলোতে ইতোমধ্যে যে সাড়ে ৫ হাজারের বেশী ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন তার শীর্ষে রয়েছে নগরীসহ পুরো বরিশাল জেলা। করোনা ও ডায়রিয়ার মত ডেঙ্গু আক্রান্তের দিক থেকেও এ জেলা শীর্ষে। বরিশাল জেলায় প্রায় ২৩শ ডেঙ্গু রোগী ইতোমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
পটুযাখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলার অন্যান্য হাসপাতালগুলোতেও প্রায় ১২শ, পিরোজপুরে প্রায় সাড়ে ৮শ, ভোলাতে প্রায় ৬শ, বরগুনাতে ৬শ এবং ঝালকাঠী জেলার হাসপাতালগুলোতে প্রায় পৌনে ২শ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সরকারী হাসপাতালগুলোতেও রোগি ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে আশংকাজনক হারে।
যা মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার অতিক্রম করেছে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের সরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাই প্রায় হাজার ছুঁই ছুঁই করছিল। এরমধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ২০৫ জন। জেনারেল হাসপাতাল সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা হাসপাতালে আরো ১২২ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এআরএস