বীর নিবাস পেতে মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার আকুতি

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৩, ০৪:৫৩ পিএম
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লাল মিয়া

বর্তমান সরকার সারাদেশে অসহায়, অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাস নির্মাণ করে দিচ্ছেন।

জীবনের অন্তিম মুহুর্তে এসে শারীরিক শক্তি হারিয়ে আয় উপার্জন না থাকায় অনাহারে, অর্ধহারে দু’চোখের কেবলই অন্ধকার দেখছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের বয়বৃদ্ধ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লাল মিয়া।

১৯৭১ সালে তিনি যখন ২০ বছরের টগবগে তরুণ সেই সময় তিনি জীবনের মায়া উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ভারতে মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং নিয়ে ১১নং সেক্টরে আফাজ কমান্ডার নেতৃত্বে যুদ্ধ শুরু করেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

জীবনের মায়া  উপেক্ষা করে দেশমাতৃকার মায়ায় ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার নিবেদিত সৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন। সেই সময়ে চোখ মুখে ছিলো সোনালী ভবিষ্যতের স্বপ্ন। দেশ স্বাধীন হলে দুবেলা আহার জুটবে, জুটবে নিরাপদ আবাসস্থল।

তাঁর বাড়ি উপজেলার আড়াইবাড়িয়া ইউনিয়নের চর জামাইল গ্রামে। বয়স ৭৫। তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলেদের  বিয়ে করিয়েছেন ও মেয়েদেরকেও বিয়ে দিয়েছেন।

তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। ছেলেরা তার দিকে ফিরেও তাকায়নি। এমনকি নেয় না খোঁজ খবরও। অসুখ বিসুখে  নিধারুণ কষ্টে কাটছে জীবন। বড়ই অসহায় ও একাকিত্ব জীবন যাপন করছেন মুক্তিযুদ্ধ লাল মিয়া।

নিজের জমিগুলো ছেলেরা লিখে নিয়েছে ।এখন তিনি নিঃস্ব। ফলে আগাছার মত আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। থাকার ঘরটুকু এখন নেই। তাও আবার ছেলেদের দখলে। তাই জীবনের শেষ বেলায় দাঁড়িয়ে তার শেষ ইচ্ছা একখন্ড জমিতেই নিজের একটি বাসা বাড়ি যেখানে বাকী জীবন তিনি নির্বিঘ্নে কাটাতে পারেন।

দারিদ্রতায় জর্জরিত এ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রী বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। তিনি  অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থেকে রোগ বালাইয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন যুদ্ধে জয় হতে চান মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়া।

তার এ মুক্তিবার্তা নম্বর ০১১৭১৩০১৫৩ গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা নম্বর ০১৪৮০০০২২৯২। তবে ভাতা হিসেবে পাওয়া অর্থ স্বামী-স্ত্রী দু’জনের চিকিৎসা ও খাওয়া পরার খরচ যোগাতে শেষ হয়ে যায়। স্থায়ী একটা বাসা বাড়ী তৈরীর চিন্তা তার কাছে দুঃস্বপ্ন মাত্র।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অনেক গরীব মানুষকে জমি দিচ্ছেন, পাকা বাড়ি করে দিচ্ছেন। স্থানীয় অনেক দুর্নীতিবাজ জনপ্রতিনিধির কারণে অনেক ভিটে মাটিহীন নাগরিক এ সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমি একজন সহায় সম্বলহীন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন একজন অসহায় মুক্তিযোদ্ধার শেষ ইচ্ছাটা যেন তিনি পূরণ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ তালা দীর্ঘায়ু দান ও পর জীবনে উত্তম পুরস্কারে সম্মানিত করবেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিন্দ্য মন্ডল  জানান, তার নাম ঠিকানা আমাকে দেন আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

এআরএস