প্রধানমন্ত্রীর উপহারে ৭ শতাধিক পরিবারের ভাগ্যবদল

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৩, ০৭:১৮ পিএম

গল্পটা এমন ঘরও নেই, জমি নেই কি করবেন দীনেশ কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না। এমন সময় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে ঘোষণা আসে গৃহহীনদের ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। দীনেশ এ কথাটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানতে পেরে যোগাযোগ করেন উপজেলা নিবার্হী অফিসারের সাথে। এরপর কিছু কাগজপত্র জোগাড় করে জমা দিয়েই তিনি পেয়ে যান একটি ঘর। এখন সেই ঘরেই দীনেশের সুখের সংসার। বলছিলাম ফরিদপুরের সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর এলাকার ঘরহীন দীনেশের কথা। তার বাড়ির এলাকায় তৈরি হয়েছে আশ্রয় প্রকল্প। সেখানেই তিনি পরিবার নিয়ে সুখে বসবাস করছেন।

দীনেশ বলেন তিনি কখনোই ভাবেননি এমন একটি সেমি পাকা ঘরে তিনি বসবাস করবেন। তার ঘরে থাকবে বিদ্যুৎসহ নানা সুব্যবস্থা। আর এমনটাই সম্ভব হয়েছে সরকারের এমন মহৎ উদ্যোগের কারণে। ‌ আর এজন্য তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

অসহায় ঘরহীন এসব মানুষের কেউ থাকতেন রাস্তা বা রেললাইনের পাশে, কেউ অন্যের বাড়ি বা জমিতে আশ্রিত, কেউবা নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত। ছিলনা নিজের কোন ঠিকানা কিংবা কোন মাথা গোঁজার ঠাঁই। ছিন্নমূল এসকল মানুষের অসহায়ত্বকে উপলব্ধি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ মুজিববর্ষ উপলক্ষে তিনি ঘোষণা দেন দেশের কোন মানুষ আশ্রয়হীন থাকবেনা।

প্রধানমন্ত্রীর এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কাজ করছে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প। এ প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুর সদর উপজেলার ৭৩১ টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ১ম পর্যায়ে ৩১২টি, ২য় পর্যায়ে ১৫৩ টি ও ৩য় পর্যায়ে ২৬৬টি গৃহ নির্মাণ করে উপকারভোগীদের নিকট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

ফরিদপুরের সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী জানান, অসহায় মানুষগুলো কখনো ভাবেননি তাদের নিজস্ব একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে, সেখানে তারা পেয়েছেন ২ শতাংশ জমিসহ একটি সেমিপাকা ঘর। আশ্রয়ণের সাইটগুলোতে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে ও উপকারভোগীদের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। উপকারভোগীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে, গঠন করা হয়েছে সমবায় সমিতি। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের গৃহ পেয়ে অসহায় এসকল মানুষ যেন তাদের আশার প্রদীপ ফিরে পেয়েছে, থমকে যাওয়া জীবনে গতির সঞ্চার হয়েছে। বেশিরভাগ উপকারভোগীর জীবিকার ব্যবস্থা হয়েছে, তাদের সন্তানরা পড়াশোনা করছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ফরিদপুর সদর উপজেলাও ‍‍`ক‍‍` শ্রেণির গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল আহ্সান তালুকদার জানান, আগামী ৯ আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৪র্থ পর্যায়ের গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন এবং দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করবেন। এ পর্যায়ে দেশের অন্যান্য উপজেলার সাথে ফরিদপুর সদর উপজেলাও ‍‍`ক‍‍` শ্রেণির গৃহহীনমুক্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এর আওতায় ফরিদপুর সদর উপজেলার ৭৩১ টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ১ম পর্যায়ে ৩১২টি, ২য় পর্যায়ে ১৫৩ টি ও ৩য় পর্যায়ে ২৬৬টি গৃহ নির্মাণ করে উপকারভোগীদের নিকট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ফরিদপুরের প্রতিটি উপজেলাকে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহীনদের পূর্ণবাসন করা হয়েছে। এতে গৃহহীনদের মুখে হাসি ফুটেছে।

এআরএস