আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর জোর পূর্বক দখলের অভিযোগ

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৩, ০৫:১৮ পিএম

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর জোর পূর্বক দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ফলে ঘরটি বরাদ্দ পাওয়া ভূমিহীন ব্যক্তি পরিবারসহ ঘরে উঠতে পারছেন না। উপজেলার ২ নং নেকমরদ ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ভবানিপুর ভেলাপুকুর আশ্রয়ন প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভবানিপুর গ্রামের ভেলাপুকুর সরকারি জায়গায় ভূমিহীনদের জন্য ৮১টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এবারের ঈদুল ফিতরের উপহার হিসেবে ঘরগুলো ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

পরিবারগুলোর প্রধানের নামে ২ শতাংশ জায়গাসহ ঘরের কাগজপত্র ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রি হয়েছে। যে ৮১টি পরিবার ঘর বরাদ্দ পেয়েছে, এর মধ্যে আলেয়া বেগম স্বামী মো. মংলু এর নামে একটি ঘর রাণীশংকৈল সাব রেজিস্ট্রার অফিস কর্তৃক রেজিস্টিকৃত ভাবে বরাদ্দ হয়েছে ।

সরেজমিনে গিয়ে এবং আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসরত প্রতিবেশীর বরাতে জানা যায়, আলেয়া বেগম এর স্বামী জীবিকা নির্বাহের জন্য ঢাকায় গিয়ে কাজ করেন, আলেয়া বেগম তার শিশু সন্তান ও শাশুড়িকে নিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করেন।

উক্ত বরাদ্দকৃত ঘরটি এক ব্যক্তি জোর পূর্বক দখল নিয়ে থাকায় বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী আলেয়া। আলেয়া বেগম এ বিষয়ে জবর দখল কারিকে ঘর খালি করতে বললে তিনি বলেন যে এই ঘরটি তার সে আর কোন দিন কাউকে ঘর দিবেন না, বা কোনদিন ঘরটি ছেড়ে দিবেন না।

এদিকে তার বাবা ঐ গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা ও তার বড় ভাইসহ মোট দুটি ঘর বরাদ্দ পেয়ে বসবাস করছেন। বেশ কিছু দিন আগে ছোট ছেলের সাথে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তার বাবা তাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এমতাবস্থায় স্হানিয় ইউপি সদস্য সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিচার সালিশের মাধ্যমে আলেয়া বেগমের বরাদ্দ কৃত ঘরটিতে থাকার ব্যবস্থা করেন।

কথা ছিল আপাতত আলেয়া বেগমের ঘরে থাকুক কয়েক দিনের মধ্যে অন্য কোথাও ঘর ব্যবস্থা করে নিবে। আলেয়া বেগম আসলে ঘরটি ছেড়ে দিতে হবে। এই বলে তাদেরকে আলেয়া বেগমের ঘরে থাকতে বলে কিন্তু দিনের পর দিন তারা কোন ব্যবস্থা না করে, অসহায় বধির প্রতিবন্ধী আলেয়া বেগমের বরাদ্দকৃত ঘরটি জবর দখল করে আছেন।

ঐ আশ্রয়ন প্রকল্পের সমবায় সমিতির নবগঠিত সভাপতি সোহেল রানার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি হোটেলে কারিগড়ের কাজ করি। সকাল সাতটায় হোটেলে আসি রাত এগারোটায় বাসায় যায়। আলেয়া বেগমর নামে বরাদ্দ থাকা ঘরটিতে এখন একজন অবৈধভাবে বসবাস করছে। বিষয়টি আমি সমিতির সভাপতি হিসেবে বলতে গেলে আমাকে বিভিন্ন রকমের হামলা ও মামলার হুমকি ধামকি দেখায় এবং এখানকার কিছু দালালের খপ্পরে পড়ে জোর করে ঘরটি দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে।

অসহায় বধির প্রতিবন্ধী আলেয়া বেগম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার স্বামী ঢাকায় কাজ করে। আমি খুব অসহায় ভাবে  শিশু সন্তান নিয়ে দিনযাপন করছি। আমার নামে বরাদ্দের ঘরে উঠতে গেলে অবৈধভাবে বসবাসকারীর পরিবারের লোকজন আমাকে গালাগালি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে মারতে আসে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর আমার নামে বরাদ্দ থাকা ঘরটি আমাকে বুঝে দেন স্যার। আমি প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাই।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিৎ শাহা এই বিষয়ে বলেন, যার নামে বরাদ্দ সে অবশ্যই ঘর পাবে। বিষয়টি আমি দেখছি। শিগগিরই আলেয়া বেগমকে ঘর বুঝিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এইচআর