ঘোড়াঘাটে রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় কর্মহীন অর্ধশত পরিবার

লোটাস আহম্মেদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২৩, ০৪:৩৯ পিএম

জমির মালিকানা নিয়ে দুই মালিকের দ্বন্দ্বে রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় খুঁটি পুতে এবং রাস্তার দুই প্রান্তে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়েছে একপক্ষ। এতে একজন মানুষ হেটে চলাচল করতে পারলেও, বের হতে পারছে না তিন চাকার কোন বাহন। তাতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে নদী ভাঙ্গন এলাকা থেকে উঠে আসা প্রায় অর্ধশত পরিবার।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের হায়দারনগর (আবিরের পাড়া) গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। গত প্রায় ১৫ দিন আগে রাস্তার বেশ কয়েকটি জায়গায় সিমেন্টের খুঁটি পুতে এবং নিজের বাড়ির সামনে রাস্তার উপর বাঁশের ও গাছের গুড়ি ব্যারিকেড দেয় স্থানীয় তোজাম্মেল হক। তারপর থেকেই কর্মহীন ৫০টি পরিবার। এসব পরিবারে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ জনের বসবাস। তারা সবাই ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় তোজাম্মেল হক ও জুলফিকারের কাছে থেকে জমি কিনে বাড়ি করেছে চরাঞ্চলের ৫০ পরিবার। জমি বিক্রির সময় যাতায়াতের জন্য রাস্তা দিয়েছে তোজাম্মেল ও জুলফিকার। এই রাস্তার মালিকানা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তোজাম্মেল হক রাস্তাটির মাঝে বেশ কয়েকটি জায়গায় সিমেন্টের খুঁটি পুতে দেয় এবং নতুন আম গাছের চারা রোপন করে। এছাড়াও রাস্তার এক জায়গায় আম গাছের মোটা গুড়ি ফেলে এবং বাশেঁর খুঁটি গেড়ে ব্যারিকেট দিয়ে রেখেছে। এতে রাস্তাটি দিয়ে কোনমতে একজন মানুষ হেঁটে যাতায়াত করতে পারবে।

এতে এসব ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী লোকজন রাস্তা দিয়ে ভ্যান নিয়ে যেতে না পারায় কর্মক্ষম হয়ে পড়েছে। এর আগেও দুই তিনবার রাস্তায় যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল তোজাম্মেল। স্থানীয় ভাবে আলোচনার পর তা পরে খুলে দিয়েছিল।

স্থানীয় ভূক্তভোগী ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা নদীভাঙ্গন এলাকার মানুষ। জায়গা কেনার সময় মালিকরা রাস্তা বের করে দিয়েছে। এখন দুই মালিকের নিজেদের দ্ব›েদ্বর কারণে রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে রাখছে।’

ভূক্তভোগী মর্জিনা বেগম (৫০) নামে এক নারী বলেন, ‘আমরা সবাই ভাঙ্গারী ব্যবসা করে দিন আনি দিন খাই। ১৫ দিন থেকে আমার বাড়িয়ালা ভ্যান নিয়ে বের হতে পারছে না। সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে আমাদের।’

সংশ্লিষ্ট ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমি একটি অভিযোগ পেয়েছি। রবিবার উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। কোন ভাবেই মানুষের যাতায়াত বন্ধ করার বা ব্যাঘাত সৃষ্টি করার সুযোগ নেই।’

এদিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ঘটনাটি আমার নজরে এসেছে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে না পারলে, আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবসা গ্রহণ করবো এবং চলাচলের রাস্তার প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হবে।’

আরএস