ফুলগাজী উপজেলা পরিষদে এক সপ্তাহে দুটি গোখরা সাপ উদ্ধার

ফেনী প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৩, ০৭:২০ পিএম

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি বিষধর গোখরা সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার আনুমানিক ৬-৭ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সাপ উদ্ধার করেন সাপুড়িয়া। এর আগে ১৭ আগস্ট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে সাপের ডিমসহ একটি গোখরা সাপ উদ্ধার করা হয়।

পরশুরাম রেঞ্জের বন বিভাগের কর্মকর্তা আবু নাছের জিয়াউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সাপের উপদ্রব বেশি হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস পর্যন্ত। এই সময় বৃষ্টি হয়, আর সাপ যে গর্তে থাকে তা পানিতে ডুবে যায়। সাপ তখন শুকনো জায়গা খুঁজে বেড়ায়। সাধারণত এ মৌসুমে প্রবল বর্ষণ ও বন্যার পানির তোড়ে বিষধর সাপ শুকনোস্থানে লুকিয়ে থাকে। বন কর্মকর্তা বলেন, সাপ জীববৈচিত্রের অংশ। সাপকে নিরাপদে চলে যাওয়ায় সুযোগ দেওয়া উচিত।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুহুল আমিন বলেন, উপজেলার প্রাণিসম্পদ কার্যালয় প্রাঙ্গণেও সাপের উপদ্রব দেখা গেছে। সম্প্রতি আশপাশের ঝোপঝাড় কেটে পরিষ্কার করা হয়েছে।

উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা মান্নান মজুমদার বলেন, শুধু উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণেই নয়, কিছুদিন আগের বন্যার কারণে নদীর পাশে গড়ে উঠা জনবসতিতেও বিষধর সাপের আনাগোনা বেড়েছে।

সাপুড়িয়া রজত বলেন, একটি গোখরা সাপ সাধারণত ২২ থেকে ৩২ অথবা ৪২টি ডিম পাড়ে। সে হিসেবে এখানে আরও সাপ থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী পৈথারা, ফেনাপুস্কুরীনি, বসন্তপুর, মনতলা, গাবতলা, জামমুড়া, পেঁচিবাড়ীয়াসহ মহুরী, সিলোনীয়া ও কহুয়া নদীর পাড়ে গড়ে উঠা জনবসতি ও কৃষি জমির বিশাল প্রান্তরে বিভিন্ন প্রজাতির বিষধর সাপের আনাগোনা রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রুবাইয়াত বিন করিম  বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপের কামড়ে আক্রান্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে সাপের কামড়ের অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত এবং আধুনিক চিকিৎসা রয়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে সাপে কাটা আহতদেরকে ওঝা বা বৈদ্যর কাছে নিলে কেবলমাত্র সময়ই নষ্ট হয় না রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে ওঝা বা কবিরাজের কাছে নিয়ে না গিয়ে কাটা স্থানের উপরে ওড়না বা গামছা দিয়ে বেঁধে নড়াচড়া না করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে বিনামূল্যে সেবা নেওয়ার পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক।

ফুলগাজীর ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  আল আমিন বলেন, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে ওষুধ ছিটানো হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১১ আগস্ট ফুলগাজী থানা প্রাঙ্গণ, একই বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ফুলগাজী উপজেলা বাংলো থেকেও সাপ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দক্ষিণ আনন্দপুর থেকে ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে ফেনী সামাজিক বন বিভাগ।

এইচআর