৩ মাসে ২১৩ আসামি গ্রেপ্তার

চন্দ্রগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নে জনমনে স্বস্তি

আলী হোসেন, লক্ষ্মীপুর প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩, ১২:৩২ পিএম

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিগত ৩ মাসে ২১৩জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরমধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ৪জন ও অন্যান্য সাজাপ্রাপ্ত আসামি ২৩জন রয়েছে।  এসময় ৫টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ব্যাপক তৎপরতায় চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নে জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।  কেটে গেছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক।
চন্দ্রগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, গত মে মাসে জিআর ওয়ারেন্টভূক্ত ১৪জন, সিআর ১৩জন, জিআর যাবজ্জীবন সাজা ১জন ও অন্যান্য সাজাভূক্ত ৩জনসহ ২৯জন এবং নিয়মিত মামলার আসামি ৩৫জনসহ মোট ৫৯জনকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। এসময় বিভিন্ন এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১টি দেশীয় তৈরী রিভলবার, ১টি দেশীয় তৈরী একনলা বন্দুক, ২টি দোনলা বন্দুক, ১টি পাইপগান ও ৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে মে মাসে পুলিশের অভিযানে ২টি চোরাই গরু উদ্ধার ও ২৫০ গ্রাম গাঁজাসহ ১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জুন মাসে জিআর, সিআর ও অন্যান্য সাজাভূক্ত আসামিসহ ৩৩জন এবং নিয়মিত মামলার ৩০জনসহ মোট ৬৭জনকে  গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আছে ২জন। একই সময়ে ২৫০ গ্রাম গাঁজা ও ১৫পিস ইয়াবাসহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে চুরির মামলায় ৩টি চোরাই ছাগল উদ্ধারসহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জুলাই মাসে জিআর, সিআর ওয়ারেন্টভূক্ত আসামিসহ মাদক মামলায় সর্বমোট ৮৭জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় ৩০০ গ্রাম গাঁজা, ২০পিস ইয়াবা উদ্ধারসহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরমধ্যে ১জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ বিভিন্ন মামলায় সাজাভূক্ত ১১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সময় চুরির মামলায় ৩২ আনা ৩ রত্তি স্বর্ণালংকার, ২টি চোরাই টিউবওয়েলসহ বিপুল পরিমাণ মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ অপরাধ দমনে স্থানীয় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। জেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক কেন্দ্র চন্দ্রগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি এম ছাবির আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. আব্দুল কুদ্দুছ বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবং চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় এখানকার ব্যবসায়ীরা এখন নির্ভিঘ্নে ব্যবসা করছে। এখন আগেরমত ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক নেই।
এ ব্যাপারে চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তহিদুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় পুলিশের নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে। বিগত ৩ মাসে আমরা বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামিসহ সাজাপ্রাপ্ত অনেক আসামি ও মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি আরও বলেন, জেলা পুলিশ সুপার তারেক বিন রশিদ (পিপিএম) মহোদয়ের নির্দেশনায় চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশ সর্বদা অপরাধ দমনে সচেষ্ট রয়েছে। মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।

আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা বলেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা অতীতের যে কোনো সময়ে চেয়ে এখন ভালো। সম্প্রতি বশিকপুরে সন্ত্রাসীরা মাথাছাড়া দিয়ে উঠলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে অনেক সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারসহ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এতে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রীক কোনো ধরনের অপরাধ বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

এআরএস