বাঞ্ছারামপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের বেড়া খুলে নেয়ার অভিযোগ

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩, ০৫:৩৫ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের রূপসদী ইউনুস আবুল হাসেম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় স্কুলের বেড়া খুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। 

এই ঘটনায় আজ শুক্রবার স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এ রহিছ খান প্রধান শিক্ষক সাইদুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে নিয়মিত ক্লাস করতে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসলে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্লাস থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান একদল মিস্ত্রী দ্বারা ক্লাস রুমের টিনের বেড়া খুলতে অনুমতি দিলে স্থানীয় লোকজন বাধা দেন। স্থানীয় লোকজন বাধা দিতে গেলে প্রধান শিক্ষক গালমন্দ করে স্কুল থেকে তাদের তাড়িয়ে দিয়ে স্কুলের ফ্যান এবং বেঞ্চ নিয়ে যায়। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের হয়রানি এবং  কু-প্রস্তাব প্রদানের অভিযোগ রয়েছে।  বিভিন্ন সময় ছাত্রীদেরকে উত্ত্যক্ত করে স্কুলকে জিম্মি করে রেখেছে বলে দাবী এলাকাবাসীর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, সকালে আমরা স্কুলে এসে ক্লাসে যাই। হঠাৎ আমাদের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান স্যার বলে তোমরা আজকে চলে যাও ক্লাস হবে না। আমাদেরকে ধমক দিয়ে উনি তাড়িয়ে দেন।  তারপর দেখি মিস্ত্রি এনে স্কুলের বেড়া খুলে স্কুল থেকে বেঞ্চ নিয়ে চলে যাচ্ছে। পরে মারামারির ঘটনা দেখে স্কুল থেকে আমরা ভয়ে বাড়িতে চলে আসি।

এ বিষয়ে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এ রহিছ খান বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবত স্কুলের হিসাব-নিকাশ নিয়ে লুকোচুরি খেলছে। স্কুলের টাকা আত্মসাৎ করে স্কুলের সুনাম নষ্ট করছে। বৃহস্পতিবার  প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান ও তার ভাই এরশাদুর রহমান ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসবাহিনী এনে স্কুলের বেড়া খুলে নিয়ে গেছে। এই ঘটনাটা আমি তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই। গতকাল আমি ঢাকা ছিলাম। আজ ঢাকা থেকে এসে যারা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নাই সাইদুরের।  তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের হয়রানি কু-প্রস্তাব প্রদানের অভিযোগ রয়েছে।  বিভিন্ন সময় ছাত্রীদেরকে উত্ত্যক্ত  করে স্কুলকে জিম্মি করে রেখেছে। ভয়ে ছাত্রীরা তা প্রকাশ করেনা। আমি এই অসৎ ও লম্পট সাইদুর সহ এই ঘটনায় যারা জড়িত আছে তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছি।

এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, আমি ম্যানেজিং কমিটির অনুমতিক্রমে স্কুলের বেড়া খুলতে যাই। পরে রছিস খানের লোক এসে বাধা দিয়ে আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম ফারুক মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় যারা জড়িত ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ মো: নূরে আলম মুঠোফোনে বলেন, শুনেছি স্কুলের জায়গা নিয়ে চাচাতো জেঠাতো ভাইদের মধ্যে দন্দ রয়েছে। স্কুলের একটি  রুম খুলে অন্য জায়গায় স্কুল স্থাপনের কথা শুনেছি। এ বিষয়ে এখনো অভিযোগ পাইনি পেলে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আরএস