সোনালী আঁশের ফলন-দামে হতাশ চাষিরা

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩, ০৪:৪৩ পিএম

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পাট চাষিদের মুখে নেই হাসি। পাটের ভালো ফলন না হওয়া ও নায্যমূল্য না পাওয়ায় পাট চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

এদিকে পাট চাষের অনুকূল আবহাওয়া না থাকায় এবার পাটের ফলন কম হয়েছে বলে জানিছেন গোদাগাড়ী উপজেলার পাট চাষিরা। চাষিদের অভিযোগ পাটের ফলন কম হলেও, বাজারে পাটের দামও পাচ্ছে না। পাট চাষ করে ধানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠাতো দূরের কথা পাট চাষ করে পাট চাষের খরচ উঠানো দায় হয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে প্রায় ৮ শ থেকে ৯০ হেক্টর। গত মৌসুমে এ উপজেলায় পাট চাষ হয়ে ছিল ৮৮০ হেক্টর।

উপজেলার চর আষাঢ়িয়াদহ, মাটিকাটা, বাসুদেবপুর ও দেওপাড়া ইউনিয়নে পাটের চাষ বেশি হয়েছে। তার মধ্যে চর আষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নে সব চাইতে বেশি পাট চাষ হয়েছে।

কৃষি অফিস বলছে, বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে এবার পাটের ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তবে বিঘা প্রতি ৮ থেকে ৯ মণ করে পাটের ফলন হচ্ছে যা গত বারের তুলনাই বেশি।

উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের পাট চাষি ফেন্সু বলেন, চলতি মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে পাটচাষ করে ছিলাম। বিঘা প্রতি ৮ মণ করে পাট হয়েছে। পাটের পাটের দাম না পাওয়ায় পাট চাষ করে লাভবান হওয়া যাবে না। কোন রকম খরচটা উঠেছে।

পাট চাষি সুবেল বলেন, যে আশা করে ছিলাম তার চাইতে ফলন কম। বাজারে পাট বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা মন। পাট চাষ করতে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। বাজারে পাটের দাম না থাকায় পাট বিক্রি করে জমি চাষের খরচ উঠায় দায় হয়ে গেছে। তবে আগের বছরগুলোতে পাট জাগ দেওয়ার জন্য তেমন কষ্ট পেতে হয়নি। এবার পুকুর, নালা ও ডোবায় পানি না থাকায় নদীর পানি বৃদ্ধি কারণে নদীতে পাট জাগ দিয়ে ছিলাম। ক্ষেত থেকে নদীতে পাট নিয়ে যেতে খরচ বেশি হয়েছে।

এদিকে পাট ছাড়ানো রাহাতন বেগম বলেন, টাকার বিনিময়ে নয়, পাটকাঠির বিনিময়ে পাট ছাড়িয়ে দিচ্ছি। তিনি বলেন, তিন ভাগ পাট কাঠির মধ্যে আমরা পাই দুই ভাগ আর মালিক নেই এক ভাগ।

তিনি আরো বলেন, আমি পাট ছড়াচ্ছি চুলা ধরানোর উদ্দ্যেশে। এখন বাড়িতে কাজ কম তাই বসে না থেকে পাট ছড়াচ্ছি।

একাধিক পাট চাষির সাথে কথা বলে জানা যায়, পাট জাগ দিতে ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা বলছে ইউরিয়া সার ব্যবহার করলে তাড়াতাড়ি পাটে পচন ধরে ও পাটের রং ভালো হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহামেদ বলেন, পাটকাটা প্রায় শেষের পথে জাগ দেওয়ার কাজ চলছে। তবে গত বছরের তুলনায় পাটের এবার ফলন বেশি। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি বিঘা প্রতি ৯ থেকে ১০ মণ পাটের ফলন হচ্ছে। সে সকল কৃষক আগাম পাট চাষ করেছে সে সকল কৃষক পাট কেটে পাটের জমিতে শীতকালিন সবজি চাষ করতে পারবে। ক্ষেতে পাটের পাতা সার হিসাবে কাজে লাগে। আশা করছি কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

এআরএস