খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় আঁখ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। দীঘিনালা উপজেলায় তামাক চাষের আখড়া হিসাবে পরিচিত। তবে বর্তমানে তামাক চাষ ছেড়ে অনেক কৃষক আঁখ চাষে করছেন। আঁখ একবার রোপন করলে ২-৩ বছর ফলন পাওয়া যায়। আঁখ চাষে লাভ বেশি খরচ কম। প্রতি ৪০ শতাংশ জমিতে আঁখ উৎপাদন করতে খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। আখ বিক্র করা যায় ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা। স্থানীয় বাজারের আঁখের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
আঁখ চাষি ফজল মিয়া বলেন, আমি তামাক চাষ করি, তামাক চাষে কষ্ট বেশি। এখন তামাক চাষ কমিয়ে দিয়েছি। শাক সবজি, আলু, ধান চাষ করি। গত দুই বছর ধরে আঁখ চাষ করছি। গত বছর ২৫ শতক জমিতে আঁখ চাষ করছি, প্রথম বছর আমার আঁখ খেতে খরচ হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। প্রথম বছর আমি ২ লাখ ২৫ হাজার টাকার আঁখ বিক্রয় করি। চলতি বছর আঁখক্ষেতে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি পিচ আঁখ ৫৫টাকা ধরে পাইকারি বিক্রি করছি। চলতি বছরও ২ লাখ টাকার মত বিক্রয় হবে আশা করছি।
তামাক চাষের চেয়ে আঁখে লাভ বেশি কি না এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, তামাক চাষের চেয়ে লাভ ডাবল। আঁখ চাষে ঝুঁকি কম, ঘুর্ণিঝড় শিলাবৃষ্টিতে আঁখের তেমন ক্ষতি হয়না। তবে, তামাক গাছ ঘুর্ণিঝড় শিলাবৃষ্টি হলে প্রচুর ক্ষতি হয়। অনেক সময় তামাক চাষে লোকসান হয়।
আঁখের রস বিক্রেতা মো. হাশেম মিয়া বলেন, দীঘিনালায় আখের রসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমি মাইনী ব্রিজ এলাকায় নিয়মিত মেশিন দিয়ে আঁখের রস রেব করে বিক্রি করি। এই রাস্তা দিয়ে সাজেকে পর্যটক আসা যাওয়া করে। আমি প্রতি পিচ আঁখ ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে চাষিদের কাছ থেকে পাইকারি কিনে এসে রস করে, প্রতি মাঝরি গ্লাস ১০ টাকা আর বড় গ্লাস ২০ টাকা করে বিক্রয় করি।
দীঘিনালা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, চলতি বছর দীঘিনালা উপজেলা ১৪০ হেক্টরে আঁখ চাষ হয়েছে। আঁখ একটি অর্থকরী লাভজনক ফসল। দীঘিনালায় আঁখ চাষের আপার সম্ভব আছে। আঁখ চাষে খরচ কম, কষ্টও কম। একই জমিতে একবার আঁখ চাষ করলে তিনবার ফলন ভোগ করা যায়। আঁখ একটি দীর্ঘমেয়াদী ফসল। তাই আঁখের সাথী ফসল হিসেবে শাকসবজি ও ডাল জাতীয় ফসল চাষ করা যায়।
এআরএস