বরিশালে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

আরিফ হোসেন,বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৩, ০১:২২ পিএম

শরতের শিশিরভেজা সকালে কাশ আর শিউলির নৈবদ্যে, স্ব-পরিবারে কৈলাস থেকে মর্তে আসবেন দেবী দূর্গা। সেই খুশির মুহূর্তকে আলিঙ্গন করতে কাজ প্রায়ই শেষ পর্যায়ে বরিশাল জেলা ও মহানগরের পূজা মণ্ডপগুলোতে। দুয়ারে কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। তাইতো দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা।

এবারও জেলার ৬৪৩টি দুর্গা পূজা মন্ডপে মন্ডপে চলছে বিশেষ প্রস্তুতি। অন্যদিকে পূর্জা মন্ডবে সিসি ক্যামেরাসহ সবধরনের নিরাপত্তার কথা জানালেন প্রশাসন। একেবারেই দোরগোড়ায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ও সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। শরৎ এলেই যেন মনে দোলা দেয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের। তাইতো দিন রাত মন্ডপে মন্ডপে দেবী দুর্গা, কার্তিক, গনেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীসহ  প্রতিমা তৈরির কাজে মহা ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা।

গত বছরের চেয়ে বেড়ে এ বছর জেলায় মোট ৫৯৮টি এবং মহানগরে ৪৫টি মোট ৬৪৩টি পূজা মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গা পূজা। হাতে সময় কম, তাই দিন রাত ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করছেন প্রতিমার তৈরির শিল্পীরা। কাদামাটি দিয়ে গড়ে তোলা দেবী দুর্গার প্রতিমায় ভরে উঠছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির।

প্রতিমাগুলোতে একমাটি ও  দো-মাটির কাজ শেষে এখন চলছে প্রতিমাগুলোতে রং ও তুলির কাজ। প্রতিটি প্রতিমা তৈরিতে আকার ভেদে কারিগররা মজুরি নিচ্ছেন ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। প্রতিমা তৈরির কারিগররা বলেন, প্রতিবছরের চেয়ে এবছর প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়ায় এক-একটা প্রতিমা তৈরিতে আগের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে বলে জানান তারা।

আয়োজকরা বলছেন, বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবছর বেশি মজুরি নিচ্ছেন কারিগররা। যে কারনে পূজার খরচ বেড়েছে বহুগুন। বরিশাল জেলার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মানিক মুখার্জী কুন্ডু বলেন, জেলায় মোট ৫৯৮টি এবং মহানগরে ৪৫টি পূজা মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। নিরাপত্তার জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করা হয়েছে।

বরিশাল পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, দুর্গা পূজাকে ঘিরে যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়াসহ পুলিশি পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোষাকে গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কেউ যদি কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবে পুলিশ।

বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, নগরীর সব কয়টি পূর্জা মন্ডবে এবছর সিসি ক্যামেরাসহ বিশেষ নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি মোড়ে মোড়ে পুলিশি চেক পোষ্ট বসানো হবে। পাশাশাপিশ পূজায় সর্বজনীন ৭৮ ও ব্যক্তিগত ৯টি মন্ডপে স্বেচ্ছাসেবক থাকবে ৮৪১ জন। এছাড়া পূজা মন্ডপ কেন্দ্রীক সম্প্রীতি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সামনে নির্বাচন থাকায় সবাইকে সতর্ক হয়ে পূজা উদযাপনের জন্য আহবান জানান তিনি।

পঞ্জিকা মতে, আগামী ২০ অক্টোবর শুক্রবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দেবীর নবপত্র কল্পারম্ভ, ওইদিন মন্ডপে মন্ডপে বেঁজে উঠবে ঢাক-ঢোল আর কাঁসরের বাজনার শব্দ এবং ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার দশমী বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপি শারদীয় দুর্গা পূজা। এবার দেবী দূর্গার আগমন ও গমন ঘটকে বা ঘোড়ায়।

এআরএস