১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কখনো গাইনি ডাক্তার আছে তো অ্যানেস্থেসিয়া নেই। আবার অ্যানেস্থেসিয়া আছে তো গাইনি ডাক্তার নেই। আর এই দুইয়ের সমন্বয়ের অভাবে দীর্ঘ তিন যুগ কোনো সিজার হয়নি।
অবশেষে দীর্ঘ ৪০ বছর পর শনিবার প্রথম সিজার (একটি মেজর অপারেশন) হয়েছে হাসপাতালটিতে। এদিন দুপুর ১১ টার সময় প্রথম সিজারের মাধ্যমে পৃথিবীর আলো দেখে এক শিশু।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরা টিলা গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী রুমা আক্তার (২৭) সিজার করা হয়। জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯৯৯ সালে ৩১ শয্যা হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর চলতি বছরের ৩০ জুলাই ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা উন্নীতকরণের উদ্ভোধন করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।তবুও নানা জটিলতার কারণে তিন যুগেও এ হাসপাতালে সিজার কার্যক্রম শুরু হয়নি।
সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন আহমদ হোসেন`র বিশেষ নির্দেশনাতে ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর গাইনী কনসালটেন্ট ডা. ফাতেমাতুজ জোহরা দোয়ারাবাজার উপজেলাতে এসে প্রথম সিজার অপেরেশনটি সম্পন্ন করেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু সালেহীন খাঁন`র তত্তাবধানে এ সিজার অপারেশনে আরও ছিলেন অ্যানেস্থেসিয়া কনসালটেন্ট ডা. মাহফুজা রহমান চৌধুরী, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাজ্জাদ হোসেন, ডা. হাসান মাহমুদ। উপস্থিত ছিলেন ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কনসালটেন্ট ( অ্যানেস্থেসিয়া) ডা. সৈয়দ খুররম আহমদ প্রমুখ।
এতে সিজারিয়ান রোগীর স্বামী আব্দুর রহিম আনন্দের সুরে বলেন, দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. আবু সালেহীন খাঁন স্যারের পরামর্শে সরকারি হাসপাতালে সিজার করায় অর্থ ও সময় অপচয় হয়নি। মা ও বাচ্চা সুস্থ আছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আবু সালেহীন খাঁন বলেন, আমাদের এখানে ডাক্তারের সংকটের কারণে প্রায় তিন যুগ ধরেও কোন সিজার অপারেশন করা সম্ভব হয়নি। আজ প্রথম অপারেশন হয়েছে।
তিনি বলেন, সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন আহম্মদ হোসেন যোগদানের পর থেকেই মা ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য সার্বক্ষণিক তদারকি ও সহযোগিতা করেছেন বলেই দোয়ারাবাজার উপজেলার মতো হাওর ও সীমান্ত বেষ্ঠিত এলাকার হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত করা সম্ভব হয়েছে। সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক হাসপাতালের সার্বিক মান উন্নয়নের জন্য সকল ধরনের সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
এআরএস