বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ার ফলে ডুবে যাওয়া ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ খ্যাত পর্যটন ঝুলন্ত সেতু দীর্ঘ ১ মাস ১৮দিন পর ভেসে উঠেছে। এতে পর্যটন কর্তৃপক্ষে সেতুতে পূর্বের দেয়া পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
পর্যটকরা ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশ করে সেতুটি আগের মতো দেখতে পেয়ে উচ্ছা¦স প্রকাশ করেন। অন্যদিকে পর্যটন কর্পোরেশনের আশা পানি কমে যাওয়ায় ঝুলন্ত সেতুটি আবারো ভেসে উঠায় ভালো ব্যবসা করতে পারবে পর্যটন কর্পোরেশন।
দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দ্যয্যের লীলা ভূমি হ্রদ, পাহাড় ও ঝর্নার মিলন মেলার জেলা রাঙ্গামাটি। প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর এই জেলায় দেশী বিদেশী কয়েক লক্ষ পর্যটক ভ্রমণ করেন। রাঙ্গামাটিতে আগত পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় থাকে পর্যটন কর্পোরেশনের ঝুলন্ত সেতু।
পাহাড়ের দুই দ্বীপ ও প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে আশির দশকে তৈরি করা হয়েছে ঝুলন্ত সেতু। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রাঙ্গামাটিতে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ার ফলে ডুবে যাওয়া ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতু। সেতু ডুবে যাওয়ায় আগত দর্শনার্থীরা মন খারাপ করে চলে যায়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ঝুলন্ত সেতু বন্ধ করে দেয়া হয়। গতশুক্রবার ১ মাস ১৮ দিন হ্রদের পানিতে ডুবে থাকার পর আবারো পযটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে এই ঝুলন্ত সেতু।
পর্যটন বোট ঘাটের ইজারাদার রমজান আলী জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় সাথে সাথে প্রতিবছরই সেতুটি হ্রদের পানিতে ডুবে যায়। এতে পর্যটন ঝুলন্ত ব্রীজটি ডুবে যাওয়া ঝুলন্ত ব্রীজ পারাপারের টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে করে পর্যটক শুন্য হয়ে পড়ে। আর পর্যটক না আসার কারণে পর্যটকবাহী বোটগুলোর চালকরা ঘাটে বসে দিন অতিবাহিত করতে হয়েছে দেড় মাসের অধিক সময় ধরে। এতে বোট চালকেরা অতি কষ্টে দিন অতিবাহিত করেছে।
তবে সেতুটি ডুবে থাকার কারনে ব্যবসায় যে ক্ষতি হয়েছে তা এবার শীত মৌসুমে পুষিয়ে উঠার চেষ্টা চালিয়েছে যাবেন।
ঝুলন্ত ব্রীজ টিকেট কাউন্টার মো. সোহেল জানান, পাহাড়ী ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় ঝুলন্ত সেতুটি হ্রদের পানিতে ডুবে যায়। এতে ঝুলন্ত ব্রীজ পারাপারের টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ঝুলন্ত সেতুটি আবারো ভেসে উঠায় পর্যটন কর্তৃপক্ষ পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নেয়ায় টিকেট বিক্রি আবারো শুরু করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক অলোক বিকাশ চাকমা জানান, হ্রদের সর্বোচ্চ পানির স্তর ১০৯ ফুট থাকলেও হ্রদে ১০৫ ফুট পানি হলেই পর্যটন এই ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যায়। এ বছরও হ্রদে পানি বাড়ায় ৩ সেপ্টেম্বর ডুবে যায় সেতুটি। হ্রদের পানি কমায় ১ মাস ১৮ দিন ডুবে থাকার পর আবারো ভেসে উঠেছে ঝুলন্ত সেতুটি।
আর সেতুটি আবারো ভেসে উঠায় সেতুটিতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, রং করাসহ প্রাথমিক মেরামত কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। একই সাথে সেতুতে পর্যটক প্রবেশে দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঝুলন্ত ব্রিজটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়।
তবে ঝুলন্ত ব্রিজটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান করা হয়নি। তাই এই ঝুলন্ত ব্রিজটি প্রতিবছর যাতে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে তলিয়ে না যায় এর জন্য নতুন করে সংস্কারের দাবী জানিয়েছে পর্যটক প্রেমিকরা। আর শীত মৌসুমে পর্যটকদের পদচারণায় মুখোর হয়ে উঠবে রাঙ্গামাটি তেমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
এইচআর