ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় এক পরিবারের চারজন নিহত

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৩, ১২:৫৮ পিএম

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় এক পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল পৌনে ৪টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

একই পরিবারের নিহতরা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজগাতী ইউনিয়নের বনহাটি গ্রামের বাসিন্দা। তারা হলেন মফিজ উদ্দিনের ছেলে সুজন মিয়া, তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার, ছেলে সজীব মিয়া ও ইসমাইল মিয়া।

নিহতের স্বজনরা জানান, সুজন ঢাকার মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে সে ভ্যানে ডাব বিক্রি করে সংসার চালাতেন। শুক্রবার বড় ভাইয়ের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে গ্রামের বাড়ি নান্দাইলের বনহাটিতে আসেন। অনুষ্ঠান  শেষে আনন্দ উচ্ছ্বাস নিয়ে সোমবার এগারোসিন্ধুর ট্রেনে ঢাকায় ফিরছিলেন। ট্রেনে যাওয়ার পথে ভৈরবে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় সুজনসহ তার পরিবারের সবাই নিহত হয়েছেন।

সুজনের ভাই স্বপন মিয়া বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমিও ঢাকায় ফিরছিলাম। তবে দুর্ঘটনার সময় আমি ৫ নম্বর বগিতে থাকায় আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছে। ৩ নম্বর বগিতে তারা ওঠে। ট্রেনে ভিড় থাকায় আমি ৫ নম্বর বগিতে উঠি।’

এদিকে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর সংবাদে রাজগাতী ইউনিয়নসহ আশপাশ এলাকায় মাতম চলছে। সকাল থেকে বনহাটি গ্রামে অসংখ্য মানুষের ভিড় জমছে।

ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন, সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত ডাক্তার ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসা যাদের প্রয়োজন তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। মরদেহ দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।‘

এর আগে সোমবার বিকালে ভৈরব জংশনে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এতে এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর আহত হয়েছে ৭০ জন কিশোরগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

রেলওয়ের প্রাথমিক অনুসন্ধান উঠে এসেছে, মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল না মানায় এ সংঘর্ষ হয়েছে। পরে ওই ট্রেনটির চালক, সহকারী চালক ও পরিচালককে (গার্ড) সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

এআরএস