বুড়িচংয়ে আমনের ফলন ভালো, কৃষকের মুখে হাসি

জাহাঙ্গীর আলম জাবির, বুড়িচং (কুমিল্লা) প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৩, ০৪:২৩ পিএম

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে এবার আমনের ফলন ভালো হয়েছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে আমন ধানের সোনালি শীষে ভরে গেছে কৃষকের জমি। বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি ধানের শীষ । চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪০ হাজার ৬৬০ হেক্টরের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ৯ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে।

উপজেলার ২নং বাকশীমূল ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামের কৃষক মো. ওমর ফারুক জানান, মাটির অবস্থা এবং নদীর অববাহিকাসহ নানা কারণে এ অঞ্চলে আমন চাষ ভালো হচ্ছে। আর চলতি বছর আবহাওয়া আমনের অনুকূলে থাকার কারণে আশা করছি  ভাল উৎপাদন হবে।  মাঠের যেদিকেই চোখ মেলে দেখা যায় আমন ধানের সবুজের মাঝে সোনালি ঢেউ। যা দেখে আমন ধান চাষিদের প্রাণেও আনন্দের ঢেউ খেলে যাচ্ছে। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহের প্রতীক্ষা, প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকরা নিশ্চিত করেন।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৫০ ভাগ ধানগাছ সোনালি শীষ নিয়ে মাটির জমিনে দাঁড়িয়ে আছে। এ ধান কদিন পরেই কৃষকের বাড়িতে গেলে, ভরে উঠবে কৃষকের শূন্য গোলা ।

রাত জেগে গৃহিণীরা ধান সিদ্ধ করে সকাল থেকে মাঠে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করবেন ।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা একটু আগাম আমন ধান চাষ করেছেন তাদের ধানে পাক ধরেছে। বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে ক‍‍`দিন পরেই শুরু হবে পুরোদমে ধান কাটা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবারে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় বাম্পার আমন ধান ফলন অর্জিত হয়েছে। বাংলা কার্তিক মাসের শেষের দিকে আমন ধান কাটাই-মাড়াই শুরু হবে। গত বছরের মতো এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় উপজেলা জুড়ে কৃষকের মুখে হাসির জোয়ার বইছে।

উপজেলার ১নং রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণগ্রামের কৃষক আব্দুল করিম ও ঘিলাতলার কৃষক কাজী মো. আবুল কালাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

আনন্দপুর গ্রামের কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর আমি ৪৫০ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ করেছি আমার ধান ভালো হয়েছে। ফসলের ক্ষেতে রোগ কিংবা পোকার কোন আক্রমণ ছিল না। উৎপাদন ভালো হয়েছে। দাম ভালো পেলে লাভবান হতে পারব।

সদর ইউনিয়নের কৃষক শওকত জানান, ২০০ শতাংশ জমিতে ধান রোপণ করেছি ফসলের ক্ষেতে রোগ কিংবা পোকার কোন আক্রমণ ছিল না তাই ফলনে আমি খুশি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আফরিণা আক্তার বলেন, এ বছর সুন্দর আবাদ হয়েছে। আমরা যেভাবে বলেছি সেভাবেই হয়েছে। আশা করছি, আমরা যা ধারনা করছি তার চেয়ে বেশি ফসল পাবো। আর আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি হেক্টরে কৃষকরা ধান পাবে সাড়ে ৪ দশমিক ৫ মেট্রিক টন।

এআরএস