ঘূর্ণিঝড় মিধিলি’র আঘাতে চাষির স্বপ্নে হানা পড়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার তরমুজ চাষীদের।
আগাম ফলন পাওয়ার আশায় ধার দেনা করে উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মেওরাপাড়া ও চিঙ্গুরিয়া গ্রামের কৃষকরা চাষাবাদ শুরু করেছিলো। জমিতে রিংবেরি, ড্রেন, থানা ও সাড় ঔষধ দিয়ে সাজিয়ে ছিলো। এমনকি বীচ ফুঁটিয়ে রোপনের উপযোগী করেছিলেন তারা।
তবে মিধিলি’র থাবায় শেষ হয়ে গেছে তাদের সেই স্বপ্ন। এতে কয়েক লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে এমনটাই দাবী করেন তরমুজ চাষীরা। তবে, ক্ষতির পরিমাণ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে দেখা যায়, আন্ধারমানিক নদী লাগোয়া উত্তর লালুয়া লঞ্চঘাট থেকে মেরাওপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১শ’ একর জমিতে চাষাবাদ শুরু করে কৃষকরা। কেউ জমিতে সার দিয়েছে, কেউ থানা করেছে আবার বীজ বপনও করেছিলো অনেকে। এসব মূহুর্তেই শেষ করে দিয়েছে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও নদীর পানিতে তলিয়ে রয়েছে ক্ষেত।
এগুলো নিষ্কাশনসহ জমি তৈরীতে আবারও ব্যস্ত হয়ে পার করছেন চাষীরা। তবে, ধার দেনা শোধের দুশ্চিন্তায় রয়েছে তারা। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আগাম তরমুজ চাষ শুরু করেছিলো কৃষকরা।
এরমধ্যে লালুয়া ইউনিয়নে প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে এ চাষাবাদ শুরু হয়েছে বলে লালুয়া ইউনিয়নের দায়িত্বরত কৃষি অফিসার মো. জামাল হোসেন জানান।
মেরাওপাড়া গ্রামের তরমুজ চাষি সাঈদ হাওলাদার বলেন, সাড়ে তিন লাখ টাকায় লিজ নিয়ে প্রায় ১৯ একর জমিতে তরমুজ চাষ শুরু করেন। প্রতি ১শ’ গ্রাম বীজ ৭ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যে মোট ২ কেজি ২০০ গ্রাম বীজ ক্ষেতে রোপনের জন্য তৈরী করেন। সর্বশেষ ক্ষেত সাজাতে তার প্রায় ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। মিধিলি’র প্রভাবে তার তরমুজ ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। এতে, প্রায় দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা তাদের দুষ্কর হবে বলে এ কৃষক জানান।
একই কথা বলেছেন, চিংগুড়িয়া গ্রামের সম্রাট খাঁন, শাহিন হাওলাদার, গিয়াস মোল্লাসহ আরও অনেক তরমুজ চাষীরা।
লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, তরমুজ চাষীরা তাদের দুঃখের কথা জানালে আমি সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেছি। মিধিলি’র প্রভাবে ওইসব তরমুজ চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরকারের তরফ থেকে সহায়তা পেলে এসকল কৃষকরা কিছুটা হলেও উপকৃত হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি অফিসার এ.আর.এম সাইফুল্লহ বলেন, মিধিলি’র প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরী করা হচ্ছে। এজন্য আমাদের ফিল্ড অফিসাররা মাঠে কাজ করছেন।
এআরএস