ফরিদগঞ্জে শ্বাশুড়ি-স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়া পূর্ব খান বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সন্দেহকে কেন্দ্র করে স্ত্রী তানজিনা আক্তার রিতু (২০) ও শ্বাশুড়ি পারভীন বেগম(৪৫) কে হত্যার দায়ে রিতুর স্বামী মো. আল মামুন মোহনকে (৩২) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) শাহেদুল করিম এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মামুন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার শায়েস্তানগর গ্রামের মিয়াজান বেপারী বাড়ির মৃত মনতাজ মাষ্টারের ছেলে। হত্যার শিকার তানজিনা আক্তার রিতু ও পারভীন বেগম চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়া এলাকার পূর্ব খান বাড়ির প্রবাসী মো. সেলিম খানের মেয়ে ও স্ত্রী।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর মামুন ও রিতুর বিয়ে হয়। মামুনের বাড়িতে ঘর না থাকায় রিতু বাবার বাড়িতে থাকতেন। এরই মধ্যে মামুন বিদেশে চলে যায়। সেখানে কাজ না পেয়ে দেড় বছর পরে দেশে ফিরে আসে। এরই মধ্যে নানা কারণে সন্দেহ সৃষ্টি হয় মামুন ও রিতুর মধ্যে। এরপর ২০২০ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার গৃদকালিন্দিয়ায় এলাকায় সেলিম খানের তিন তলা ভবনের নীচতলায় সামনে ইফতারের সময় স্ত্রী ও শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন মামুন। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।

ছুরিকাঘাত করার পর রিতু ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং তার মা পারভীন বেগম ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় রিতুর চাচা মো. লিয়াকত খান ফরিদগঞ্জ থানায় মামুনকে আসামি করে মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করেন তৎকালীন সময়ের ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ শহীদ হোসেন। তিনি তদন্ত শেষে ওই বছর ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ভূঁইয়া। তিনি জানান, মামলাটি তিন বছরের অধিক সময় চলমান অবস্থায় আদালত ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। স্বাক্ষ্য প্রমাণ, মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা ও আসামি তার অপরাধ স্বীকার করায় আদালত এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামি মামুন উপস্থিত ছিলেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী হিসেবে আরও ছিলেন অ্যাডভোকেট দেবাশীষ কর মধু ও অ্যাডভোকেট জসিমউদদীন (২) এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর ও অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া।

এআরএস