মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বোয়ালী এলাকায় গাছের ডালের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। পরিবারের দাবি, সুদের টাকা না পেয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়।
জানা যায়, ২৫ দিন আগে ইমান আলীকে অপহরণ করা হয়েছিলো। পরে হাত পা বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় থানায় মামলা করেছে নিহতের পরিবার। আবার অপহরণের দুইদিন পর হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী ইমান আলীকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকালে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ইমান আলীর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকালে শিবালয় উপজেলার বোয়ালী এলাকায় গাছের ডালের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
ইমান আলী জেলার ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের শাইলকাই গ্রামের মৃত হারান শেখের ছেলে। ঘিওর বাজারের পঞ্চরাস্তা মোড় এলাকায় তার হার্ডওয়্যারের দোকান রয়েছে।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহ নূর-এ আলম লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রথমে অজ্ঞাতনামা হিসাবে লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেছে পিবিআই। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য লাশের ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের মেঝ ছেলে মিলন হোসেন জানান, তার বাবা রোববার (২৬ নভেম্বর) সকালে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। কোথাও খুঁজে না পেয়ে ঘিওর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকালে পুলিশের মাধ্যমে খবর পান তার বাবার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে হাসপাতাল মর্গে এসে লাশ সনাত্তক করেন। তার বাবার পড়নের লুঙ্গি, শার্ট ছেড়া ও পায়ে ক্ষত ছিল। গলায় রশির দাগ। তার অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর তার বাবার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। যাতে সবাই আত্মহত্যা মনে করেন।
মিলন আরও জানান, তার বড় ভাই কামাল হোসেনের কাছে গ্রামের রিপন প্রধান নামে একজন সুদ ব্যবসায়ী দেড় লাখ টাকা পেতেন। সুদে আনা ওই টাকার জন্য তার বাবাকে প্রায়ই চাপ দিতো সুদ কারবারি রিপন প্রধান। তাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন তিনি। গত ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে সাতটার দিকে রিপনের কথা বলে অজ্ঞাত তিন যুবক সিএনজি করে তাকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর আর খুঁজে পাওয়া যায় না। পরদিন রাতে দৌলতপুর উপজেলার ধামসর এলাকায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে। এঘটনায় রিপনসহ অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে ঘিওর থানায় মামলা করা হয়। এরপর থেকে আসামিরা নানাভাবে মামলা তুলে নিতে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলো তাদের।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর ইসলাম জানান, ইমান আলীর অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়েও থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়। লাশ উদ্ধারের ঘটনা তিনি শুনেছেন বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অপহরণ মামলার আসামীরা জামিনে আছেন বলেও জানান ওসি।
এআরএস