শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শীতজনিত রোগী

দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
ছবি: আমার সংবাদ

টানা কয়েক দিনের কড়া শীতে বেড়েছে ঠান্ডাবাহিত রোগ। চিকিৎসকরা বলছেন, ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণ।  এতে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সাতক্ষীরার শিশু হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও শহরের প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের ভীড়। সবচেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে ভর্তি হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক মানুষ। সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ জনের বেশি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শীতের প্রকোপের সাথে সাথেই বেশির ভাগ শিশুরা সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শীতজনিত রোগে বাদ পড়ছে না বয়স্ক মানুষেরাও। গত ১ সপ্তাহে বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে শুধুমাত্র শীতজনিত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন ৫ হাজারেরও বেশি। শীতজনিত রোগ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে চিকিৎসকরা অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

[272757]

এদিকে, সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালে ৩০ বেডের বিপরীতে বর্তমানে ৪০ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। ফলে ওয়ার্ডের  অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করে শিশু রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ১১টা বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৩৫ জন। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৩ টা বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ২৭ জন।

সিভিল  সার্জন ডা. শেখ সুফিয়ান রুস্তম বলেন, বাংলাদেশে বেশ কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়েছে। এই ঠান্ডার কারণে সর্দি, কাশি, জ্বর,  শিশু ডায়রিয়া বেড়েই চলেছে। আমারা ঠান্ডার কথা মাথায় রেখেই বাচ্চাদের জন্য বিশেষভাবে সতর্ক আছি। বিগত ২৪ ঘণ্টায় সমগ্র জেলায় ভর্তি হয়েছে ১৫ জন শিশু এবং শীতের শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত ৯১৩ জন বাচ্চা ভর্তি হয়েছে। আমাদের এখানে এখনো পর্যন্ত ঠান্ডা জনিত কারণে কোন শিশুর মৃত্যু ঘটেনি। আমরা বিগত দুই সপ্তাহ ধরে ঠান্ডার বিরুদ্ধে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা প্রতিদিন  শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে ১৫০ জনেরও বেশি রোগীর সেবা দিচ্ছি এবং অন্যান্য হাসপাতাল গুলোতেও আমাদের ডাক্তাররা নিরলস ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এই শীতকালীন রোগ প্রতিহত করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে অভিভাবকদের। একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে কোনভাবেই শিশুকে ঠান্ডা খাবার, পচা, বাসি খাবার খাওয়ানো যাবে না। সব সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে শিশুর উপর।

[272757]

সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. আবুল বাশার আরমান জানান, আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তনে শিশু ও বয়স্করা নিজেদের ব্যালেন্স করতে না পেরে সাধারণত জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে রোটা ভাইরাসের কারণে যে ডায়রিয়াটা হয় এই ধরনের রোগী আমরা বেশি পাচ্ছি। সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে আমরা প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন রোগীর চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি এবং যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

তবে চিকিৎসকরা বলছেন, শীতজনিত রোগের বেশিরভাগই স্বল্পমেয়াদী ও সহজ চিকিৎসায় সেরে যায়। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক কিংবা অন্য যে কোনো ওষুধ সেবন না করতে। পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে রক্ষা করতে শিশুর গায়ে গরম কাপড় ছাড়াও হাত পায়ে মোজা পরাতে হবে।

এআরএস