বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ফুল চাষিরা ১০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
শস্যভাণ্ডার নামে খ্যাত ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা এখন ফুলের ভান্ডারে পরিণত হয়েছে।
এলাকাবাসী ও মহেশপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ১৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে জারবেরা, গ্লাডিওয়ালা, রজনিগন্ধা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা ও গাঁদা ফুল উল্লেখযোগ্য। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারই বেশি পরিমাণ ফুল চাষ হয়েছে।
এক সময় শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত ছিল মহেশপুর। ধান ও গম ছাড়া তেমন কোনো ফসল উৎপাদন হতো না। তখন উৎপাদনের ৭০ ভাগ শস্য দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হতো। বর্তমানে কলা, বিভিন্ন জাতের সবজি, পেয়ারা, পেঁয়াজ-রসুন, কমলা,মাল্টা লেবু ও কুল চাষ হচ্ছে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য হারে ফুলচাষ শুরু হয়েছে।
এ উপজেলায় মোট জমির পরিমাণ ৪৯২১০ দশমিক ২০ হেক্টর, মোট ফসলি জমি রয়েছে ৪০৪৮০ হেক্টর। এরমধ্যে ফুল চাষ হয়েছে ১৩৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর ছিল একশ হেক্টরের নিচে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আসাদুজ্জামান জানান, ফুলের চাহিদা ও দাম বেশি পাওয়ায় চাষিরা ফুল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। বর্তমানে জারবেরা ফুল ১৫-২০ টাকা, গ্লাডিওয়ালা ১০-১৮ টাকা, গোলাপ ১০-১৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৩-৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, একবিঘা জমিতে ৫০ হাজার থেকে একলাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারছেন চাষিরা। বর্তমানে মহেশপুরের ফুল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি হচ্ছে। বিশ্বভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে ফুল কেনার জন্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে মহেশপুর চাষিদের সাথে যোগাযোগ করেছেন পাইকারি ক্রেতারা। ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতেই তা বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করার কথা।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ফুল বিক্রি করা হচ্ছে। এরমধ্যে জারবেরা, গোলাপ ও রজনীগন্ধার চাহিদা বেশি। গাঁদা ফুলের ঝোঁকা বা মালা তৈরি করে তা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে। ঝোঁকা বা মালা তৈরির কাজে গ্রামের মহিলারাও জড়িয়ে পড়ছে।
শ্যামকুড় ইউনিয়নের চাপাতলা গ্রামের ফুলচাষি নাজমুল ইসলাম জানান, তারা গত কয়েক বছর ধরে ফুল চাষ করে আসছেন। এই চাষে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।
বোয়ালিয়া গ্রামের ফুলচাষি হারুন আর রশিদ জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল চাষ করেছেন। এখান থেকে ভালো লাভ পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
ঝিনাইদহ জেলার অর্ধেকের বেশি পরিমাণ ফুল চাষ হয়েছে এ উপজেলায়। এবার দাম বেশি পেলে আগামী বছর আরো ফুল চাষ বাড়বে বলে মহেশপুর কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মধ্যে প্রায় সব জায়গাতে ফুল চাষ হয়েছে এ বছর।
বিআরইউ