জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কলাবাধা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে শামিয়ানার নিচে। যে স্কুলের শিক্ষার্থী সে স্কুলে পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম না থাকলেও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে না জানিয়ে প্রথমদিন এ স্কুলের পরীক্ষার্থীরা নিজেদের স্কুলেই পরীক্ষা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আজও না জানিয়ে একইভাবে শামিয়ানার নিচে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরজমিনে তথ্য সংগ্রহ করে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাহিরে আসলে সাংবাদিকদের দুরমুট ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিলাশ সরকার বলেন, এই পরীক্ষার কেন্দ্রের দায়িত্বে আমি রয়েছি। কী জন্য এসেছেন, কি সমস্যা.? এটা নিয়ে কোন নিউজ করা যাবে না।
ইউপি সদস্য হয়ে কীভাবে এ দায়িত্ব নিয়েছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে নকল হয় কিনা এটা বাহির থেকে আমি দেখাশোনা করি বলে ইউপি সদস্য বিলাস সরকার ফোন করে তার কয়েকজন অনুসারীদেরকে ডেকে আনেন।
কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে চারটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। এসএসসি (জেনারেল) শিক্ষার্থী ৪৩২ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি (ভোকেশনাল) শিক্ষার্থী ২৭২ জন শিক্ষার্থী এ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। এদের মধ্যে শামিয়ানার নিচে পরীক্ষা দিচ্ছেন ১২০ জন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ‘কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার ১১১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রের চারপাশে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বিদ্যালয়ের মাঠের ঢুকতেই দেখা যায়, মাঠের একপাশে শামিয়ানা করা হয়েছে। শামিয়ানার মধ্যে আবার তিনটি কক্ষ করা হয়েছে। শামিয়ানার নিচে ১২০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন। এর মধ্যে ওই স্কুলেরই শিক্ষার্থী রয়েছেন ৫৬ জন। পার্শ্ববর্তী অন্য স্কুল থাকলেও এভাবে পরীক্ষায় নেওয়ায় সুধী মহলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
তারা বলেছেন, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের পরীক্ষার্থীদের বেশি সুবিধা দিতেই শামিয়ানা করে পরীক্ষা নিচ্ছেন।
শামিয়ানার ভেতরে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, মাঠের ভেতরে শামিয়ানা টাঙিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এই কেন্দ্রের পাশে একটু দূরে কলাবধা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ছিল সেটাই পরীক্ষা কেন্দ্র করতে পারতো। কিন্তু সেটা পরীক্ষা কেন্দ্র করেনি। না করে একই এই কেন্দ্রের সঙ্গে লাগানো প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে একটা ভেন্যু করে।
কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব মো. মুনায়েম বলেন, কলাবাধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কলাপাধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভেন্যুতে পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে আসন সংকট থাকায় শামিয়ানা করা হয়েছে। প্রথম পরীক্ষা কলাবধা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তাদের অ্যাকাডেমি ভবনের পরীক্ষা হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারের সাথে কথা হয়েছে তারা একটা আবেদন দিতে বলেছেন। আমরা আজকেই আবেদন দিবো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী একই বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। আর শামিয়ানার বিষয়টি আমি জানি না, আপনাদের কাছ থেকে বিষয়টি মাত্র শুনলাম। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
এ বিষয়ে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত বলেন, আমাদেরকে না জানিয়ে শামিয়ানা টাঙিয়ে পরীক্ষা নিয়েছে। এ বিষয়টি জানার পরে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশে একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে রয়েছে, সেই জায়গায় পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেছি।
ইএইচ