বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড

বাড়িতে পৌঁছাল ৩ লাশ, শোকার্ত মানুষের ঢল

রামু ( কক্সবাজার ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২৪, ১০:৫৩ এএম

ঢাকায় বেইলি রোডে বহুতল ভবনের অগ্নিকাণ্ডে রাজস্ব কর্মকর্তা শাহাজালাল উদ্দীনসহ স্ত্রী ও কন্যার মৃত্যুর ঘটনায় বাকরুদ্ধ ছেলে ও মেয়ের পরিবার। 

শনিবার সকাল ১১ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শাহজালালসহ স্ত্রী কন্যার লাশ স্বজনদের হস্তান্তর করার পর এম্বুলেন্সযোগে রাত সাড়ে ৮ টায় শাহাজালালের শ্বশুর বাড়ি কক্সবাজারের রামু ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের শ্রীকুলস্থ হেলালি ম‍্যানশনে পৌঁছায়।  লাশ পৌঁছানোর পর শ্বশুর বাড়িতে কান্নার মাতমে চারিদিক শোকের আবহ সৃষ্টি হয়।

লাশ আসার পর আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা এক নজর দেখতে ভিড় জমান। রাত ১০ টার দিকে  শ্বশুর বাড়ি থেকে  শাহজালাল ও তার মেয়ে জামিরার লাশ এম্বুলেন্সযোগে উখিয়া হলদিয়া পালং পূর্ব গোয়ালিয়া এলাকায়  গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। 

অন‍্য দিকে রাত সাড়ে ১১ টায় ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার আহমদ হেলালীর মেয়ে মেরুন্নেছা মিনার নামাজে জানাজা রামু কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন রামু কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা হাফেজ শামসুল হক।

রোববার সকাল ১১ টায় মরিচ্যা স্টেশনের দক্ষিণ পার্শ্বে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে তাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পশ্চিম মরিচ্যার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কবরস্থানে তাঁদের দাফন সম্পন্ন করা হবে।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটার দিকে খেতে ঢাকা বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে যান রামু  ফতেখাঁরকুল শ্রীকুল   এলাকার বাসিন্দার ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার আহমদ হেলালীর মেয়ে মেরুন্নেছা মিনা (২৪) ও তার স্বামী কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজালাল (৩৫) এবং একমাত্র মেয়ে ফাইরুজ কাশেম জামিলা (০৩)।

রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেই অগ্নিকাণ্ডে তাদের তিনজনেরই  মর্মান্তিক  মৃত্যু হয়। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিহতদের শনাক্ত করে তাদের পরিবারবর্গ।

ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার আহমদ  হেলালীর জামাতা নিহত কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজালাল হলদিয়া পালং পূর্ব গোয়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আবুল কাশেমের ছেলে।

এদিকে ইঞ্জিনিয়ার মোক্তার আহমদ হেলালী জানান, তার জামাতা হাউস কেরানীগঞ্জের পানগাঁও অফিসে কর্মরত ছিলেন। পানগাঁও বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। তিন দিনের ছুটিতে খাগড়াছড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন তারা। কিন্তু তাদেরকে মোবাইলে না পেয়ে খুঁজতে খুঁজতে ছুটে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে খুঁজে পান মেয়ে, নাতনি ও জামাতার লাশ।

পানগাঁও বসুন্ধরা রিভারভিউ এলাকার  বাসা থেকে স্বপরিবারে বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট নাস্তা খেতে গিয়ে  অগ্নিকাণ্ডে স্ত্রী, তিন বছর বয়সী একমাত্র মেয়েসহ স্বপরিবারে লাশ হলেন কাস্টমস অফিসারসহ শাহজালাল। তাদের করুণ মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

এইচআর