কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ইটভাটার জন্য অবাধে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। জমির মালিকের অভিযোগ অনেক সময় জোর করে জমির মালিককে না বলেই প্রভাবশালী এই চক্রটি মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জমির প্রকৃত মালিক মো. আলি আল রাজি (বাবু) ইটভাটার মালিক মো. আবুল কালাম আজাদ (মানিক হাজী) ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত জমি ইট তৈরি ও রাখা এবং ব্যবহারের জন্য লিজ দেওয়া হয়। তবে তিনি এটা না করে ওই জমি থেকে মালিককে না জানিয়ে অনেক গভীর করে মাটি উত্তোলন করে নিজের ইট ভাটার কাজে লাগিয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে জমির মালিকের লোকজনকে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি দেখায়।
প্রভাবশালী ব্যক্তি জমির মালিককে না জানিয়ে জোর করে মাটি কেটে নিয়ে গেছে। ফলে দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়। এদিকে ভূমি প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে বলা হয়েছে অবৈধভাবে মাটিকাটা উত্তোলনে প্রকৃতি কোন ক্ষতি সাধিত হোক বা না হোক আর এ কাজও অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং তার জন্য দুই বছর থেকে ও ৬ মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে এবং দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এই আইন প্রয়োগ করা যাবে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী হুমায়ুন প্রমানিক (৫৫), পিতা মৃত সেকেন্দার প্রমানিক চর বাড়াদির সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, গত শুক্রবার (২২ মার্চ) জমির মালিক বাবু সরেজমিনে তিনি এসে তার জমিতে গর্ত করে মাটি কাটা হয়েছে বলে ভাটার লোকজনের সাথে এই বিষয়ে কথা বলছিলো আমাকে না জানিয়ে মাটি কেন কাটা হলো। তারপরে দেখছি ভাটার মালিক মানিক হাজির লোকজন আবার ভেকু দিয়ে গর্ত বন্ধ করে দিলো।
ভেকুর ড্রাইভার সুজন শেখ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা এখানে দিন হাজিরায় কাজ করি। ভাটার মালিক মানিক হাজি আমাকে মাটি কাটতে বলেছিলো তাই কেটেছি। আবার এখন গর্ত জায়গা ভরাট করে দিতে বলেছে করে দিয়েছি। জমির মালিক আর ভাটার মালিকের মধ্যে কি কথা হয়েছে তা আমরা জানি না।
ভাটার মালিক মো. আবুল কালাম আজাদ (মানিক হাজি)র সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার সাথে ৫ বিঘা জমির চুক্তি হয়েছে। আমার এখানে উঁচু করে মাটি রাখা ছিল। জমির মালিক আলি আল রাজি বাবু গতকালকে এসেছিল বলার সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার মাটি অন্যথায় সরিয়ে নিয়ে সমতল করে দিয়েছি। আমার এখানে কোন গাফিলতি নেই। জমির মালিক আমাকে আবার জমি যদি লিজ দেয় তাহলে নিতে রাজি আছি আর না দিতে চাই তাহলে জমি ফেরত দিয়ে দিবো।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক আমার কাছে অভিযোগ করেছে। আইন সবার জন্য সমান। ফসলি জমির মাটিকাটা সম্পূর্ণ নিষেধ এর সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এই বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক আলি আল রাজি বাবুর সাথে সাংবাদিকদের কথা হলে তিনি জানান, আমি ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর দরখাস্ত দিয়েছি।
এ ব্যাপারে ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ জহুরুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পত্র পেয়েছি আমরা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এআরএস