সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিতে সেতু

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০২৪, ০৭:১৩ পিএম

কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীর ওপর নির্মিত সৈয়দ মাছ-উদ রুমী সেতু সংস্কার অভাবে যান চলাচলে ঝুঁকিসহ জনদুর্ভোগ বেড়েছে।

২০০৪ সালে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের অদূরে নির্মিত সেতু থেকে গত ১৯ বছরে টোল আদায় হয়েছে প্রায় দেড়শত কোটি টাকার অধিক। কিন্তু যথাযথ সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ অভাবে ৫শ’ মিটার দীর্ঘ সেতুর স্প্যানের উপরের কার্পেটিং উঠে খানা-খন্দক ও অসংখ্য ঢিবি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এবারের ঈদযাত্রায়ও থামছে না জনভোগান্তি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে এই সেতুতে ২০০৫ সাল থেকে ইজারাদারের মাধ্যমে টোল আদায় করা হচ্ছে। গত ১৯ বছরে সেতু নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে পাঁচগুন টাকা ইতোমধ্যে আদায় হয়েছে। কিন্তু সংস্কার অভাবে সেতুর উপরের অংশের ৫শ মিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে খানা-খন্দক ও সৃষ্ট উঁচু ঢিবির ওপর দিয়ে মারাত্বক ঝুঁকিতে চলছে যানবাহন।

এছাড়াও সেতুর দুটি স্প্যানের সংযোগস্থলে সৃষ্ট অস্বাভাবিক দূরত্ব (গ্যাপ) অতিক্রমের সময় যানবাহনে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি হয়। জনগুরুত্বসম্পন্ন এই সেতুর ফলে কুষ্টিয়ার সাথে ঢাকা, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলার মধ্যে যোগাযোগ সহজ ও সড়ক নেটওয়ার্ট বিস্তৃত হয়েছে।  

অ্যাম্বুলেন্স, বাই সাইকেলসহ ছোট-বড়সহ শতাধিক  যানবাহন প্রতিদিন সেতুতে চলাচল করে। কিন্তু সেতুর সড়ক অংশের কার্পেটিং সংস্কারে কর্তৃপক্ষের নেই ভ্রূক্ষেপ।

সেতুর টোল ঘরের সংলগ্ন সড়কের অংশবিশেষ মারাত্মক দেবে গেছে। রক্ষণাবেক্ষণসহ রঙ না করায় সেতুর উপরিভাগের দৃষ্টিনন্দন স্টিলের কাঠামো বিবর্ণ ও শ্রীহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া সড়ক বিভাগের উদাসীনতায় সেতুর দুপাশের ফুটপাতের নিচে জমে থাকা বালুর স্তূপে মোটরসাইকেল আটকে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা।

পাশাপাশি স্থাপিত রেলসেতুতে সম্প্রতি রঙের কাজ সম্পন্ন করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হলেও এই সড়ক সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই তৎপরতা। এছাড়া কুষ্টিয়া সড়ক উপ-বিভাগীয় বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) লিটন আহমেদ খান সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত কার্পেটিং সংস্কার কাজ চলমান দাবি করলেও সরেজমিন ঘুরে মেরামত কাজের কোন অস্তিত্ব মেলেনি।

এদিকে এই সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের পাঁচ-ছয়গুনের অধিক টাকা আদায় হওয়ায় টোল প্রত্যাহার দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। টোল প্রত্যাহার দাবিতে এর আগে সড়ক অবরোধসহ মানববন্ধন করেছে যানবাহন চালক ও স্থানীয়রা।

সেতু নির্মাণ ব্যয়ের চেয়ে কয়েকগুণ টাকা আদায় সত্ত্বেও টোল বহাল রাখা সমীচীন নয় বলে মত দেন কুষ্টিয়া জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকবুল হোসেন লাভলু।

টোলঘরের দায়িত্বরত মো. সিরাজ জানান, সেতুর সড়কটি দীর্ঘকাল মেরামত না হওয়ায় যান চলাচলে ঝুঁকি বাড়ছে। আশু সংস্কার দাবি করেন তিনি।  

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম জানান, সম্প্রতি সড়ক বিভাগের একটি টেকনিক্যাল কমিটি সরেজমিন সেতু পরিদর্শন করেছে। কমিটির মূল্যায়ন ও অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে সেতু সংস্কারসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান। তবে টোল আদায় সংক্রান্ত বিষয়টি সম্পূর্ণ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত বলে জানান তিনি।

ইএইচ