বন কর্মকর্তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে পাহাড় খেকোরা একটি বার্তা দিতে চেয়েছিল যে তাদের পথে কেউ বাধা হলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আমরাও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করে একটি নজির স্থাপন করতে চাই। এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। জড়িতদের এমন বিচার করা হবে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করার কথা কেউ চিন্তাও না করে। এমন মন্তব্য করেছেন রিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
রবিবার (০৭ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভিটিকান্দি গ্রামে পাহাড় খেকো চক্রের হাতে নিহত বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে চেক ও নগদ টাকা হস্তান্তর শেষ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও অবগত রয়েছেন। সময় সুযোগ পেলে তিনিও নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন। বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত আমরা তাদের চিহ্নিত করতে পেরেছি। এ ঘটনায় একজন আটক হলেও বাকিরা গা ঢাকা দিয়েছে। আমরা তাদের আটকের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারের সাথে আমার নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। অচিরেই সব আসামিকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
এর আগে মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে সকাল পৌনে ১১টায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভিটিকান্দি গ্রামে নিহত বন কর্মকর্তা সাজেদুজ্জামানের বাড়িতে পৌঁছান। এসময় তিনি নিহত বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানের বাবা শাহজাহান মাস্টার, মা উম্মে কুলসুম এবং স্ত্রী মুমতাহেনা সুমির সাথে কথা বলেন। নিহত সাজ্জাদুজ্জামানের ৯ মাসের সাদিয়া নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
এ সময় নিহত বন কর্মকর্তার মা এবং স্ত্রীর হাতে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন ১০ লাখ টাকার চেক এবং মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫ লাখ টাকা প্রদান করেন তিনি। পাশাপাশি নিহত বন কর্মকর্তার স্ত্রী মুমতাহেনা সুমিকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। পরে তিনি নিহতের কবর জিয়ারত করে রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, বন সংরক্ষণ (প্রশাসন) আব্দুল আউয়াল সরকার, পরিবেশ বন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব আবু নাঈম মোহাম্মদ মারুফ খান, মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশরাফুল আলম, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার সহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ৩১ মার্চ রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে ডাম্প ট্রাকে করে মাটি পাচার করার সময় বাধা দিতে গেলে ড্রাম ট্রাক চাপা দিয়ে নির্মমভাবে খুন করা হয় বন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামানককে। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তিনি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বন বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন।
বিআরইউ