বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার ও কুমিল্লার কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাশের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শনিবার কুমিল্লায় আনা হয়। এদিন বিকাল ৪টার দিকে লাশবাহী ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স কুমিল্লা টাউন হল মাঠে রাখা হয়।
পরে কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার প্রথমে শিব নারায়ণ দাশের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া, জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মতিউল ইসলাম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ, মহানগর যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কুমিল্লা মহানগর বিএনপি, কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, কুমিল্লা সাংস্কৃতিক জোট, বন্ধু ফোরাম, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, খেলাঘর, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি), জাতীয় শ্রমিক লীগ, সংলাপ প্রতিবিম্ব, বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণীপেশার মানুষ এই বীর যোদ্ধার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় বক্তব্য দেন- কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, শিব নারায়ণ দাশের সহধর্মিণী গীতশ্রী চৌধুরী, ছেলে অর্নব দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান পাখি, অ্যাডভোকেট সৈয়দ আবদুল্লাহ পিন্টুসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
১৯৭০ সালের ৬ জুন ছাত্রনেতা শিব নারায়ণ দাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমান শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৬নং কক্ষে রাত এগারটার পর পুরো পতাকার নক্শা সম্পন্ন করেন। এ পতাকাই পরবর্তীতে ১৯৭১-এর ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলিত হয়। পরে ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকার পরিবর্তে শিব নারায়ণ দাশের নকশা করা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার শিব নারায়ণ দাসের নকশা করা পতাকার মধ্যে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ ও তার ব্যাখ্যা সংবলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলে পটুয়া কামরুল হাসানকে। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
ইএইচ